কুড়িগ্রামে জাপা নেতা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক চার

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় দুর্বৃত্তের হাতে নিহত জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতা আতিকুর রহমান হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করা হয়েছে। এদিকে গতকাল শুক্রবার মাদারগঞ্জ ক্লিনিক মাঠে নিহত আতিকুরের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রচুর লোকসমাগমের কারণে পরপর তিনবার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
কচাকাটা থানার পুলিশ জানায়, আতিকুরের লাশ ময়নাতদন্তের পর গত বৃহস্পতিবার রাতেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। লাশ হস্তান্তরের সময় শত শত মানুষ নিহত জাপা নেতার বাড়িতে জড়ো হয়।
কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে স্বপন আলী, রবিনসহ অজ্ঞাত সাত-আটজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যে মোটরসাইকেলে করে আতিকুর ফিরছিলেন, সেই মোটরসাইকেলের চালক সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলতাফ হোসেনসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের সূত্রে জানা যায়, লাশ বাড়িতে আনার পর পরিবারের সদস্য ও উপস্থিত লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। নিহত নেতার মা আঞ্জুমানারা বেগম ছেলের লাশ দেখে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আতিকুরের স্ত্রী শাহিদা বেগম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে চিৎকার করছিলেন, ‘আমার স্বামীকে এনে দাও।’ আতিকুরের একমাত্র মেয়ে নেহামণি (৪) সবার কান্না দেখে নিজেও চিৎকার করে কাঁদছে।
আতিকুরের মামা মোজাম্মেল হক বলেন, আতিকুরকে ছোট রেখে তাঁর বাবা মারা যান। মা আঞ্জুমানারা বেগম অনেক কষ্টে ছেলেকে মানুষ করেন। বড় হয়ে আতিকুর গঙ্গাধর নদের ভাঙন রোধসহ নানা সামাজিক কাজ করে এলাকায় জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তিনি নাগেশ্বরীর বল্লভের খাস ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি এবং চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন।
গতকাল সকাল সাড়ে নয়টায় আতিকুরের মরদেহ মাদারগঞ্জ ক্লিনিক মাঠে নেওয়া হলে চারদিকে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁর জানাজায় আরও উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম-১ আসনের (নাগেশ্বরী-ভূরুঙ্গামারী) সংসদ সদস্য এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান।
জাতীয় পার্টির (এরশাদ) নেতা আতিকুর রহমান গত বুধবার রাত ১১টায় মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে হাজীপাড়া নামক স্থানে সাত-আটজন দুর্বৃত্ত পথ রোধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে ও পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে।