মুজাহিদের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ আজ বুধবার রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেছেন।

আজ সকালে মুজাহিদের অন্যতম আইনজীবী শিশির মনির প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।

প্রথম আলোকে শিশির মনির বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিভিউ আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। ৩৮ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ৩২টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাবেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। আজ বেলা একটার দিকে তাঁর সংবাদ সম্মেলন করার কথা।

মুজাহিদ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে আছেন। গতকাল মঙ্গলবার এই জামায়াত নেতার সঙ্গে তাঁর আইনজীবীরা সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে আইনজীবীরা বলেন, মুজাহিদ এই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কাল (বুধবার) এই আবেদন দাখিল করা হবে। আইনজীবীদের ওই ঘোষণা অনুযায়ী আজ রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেন মুজাহিদ।

গতকাল বেলা তিনটার দিকে মুজাহিদের পাঁচজন আইনজীবী শিশির মনির, মসিউল আলম, এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, মতিউর রহমান আকন্দ ও আসাদ উদ্দিন কারাগারে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা প্রায় আধা ঘণ্টা তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।

এর আগে ৩ অক্টোবর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মুজাহিদের সঙ্গে দেখা করেন তাঁর আইনজীবীরা। তখন মুজাহিদ তাঁর আইনজীবীদের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করার প্রস্তুতি নিতে বলেন। গত শুক্রবার মুজাহিদের সঙ্গে তাঁর পরিবারের সদস্যরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষাৎ করেন।

বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী মুজাহিদকে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে সর্বোচ্চ সাজা দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। খালাস চেয়ে ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন তিনি। কিন্তু বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের দায়ে আপিলেও তাঁর সর্বোচ্চ সাজা বহাল থাকে।

মুজাহিদের আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়। একই দিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর আপিল মামলারও পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ওই দিন রাতে আপিল বিভাগের এই দুটি পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পৌঁছায়। ট্রাইব্যুনাল মুজাহিদ ও সাকা চৌধুরীর মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেন। পরে ওই মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পাঠানো হয়।