সাংসদ মনজুরুল ইসলাম গ্রেপ্তার

সাংসদ মনজুরুল ইসলাম
সাংসদ মনজুরুল ইসলাম

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সাংসদ মনজুরুল ইসলাম লিটনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
আজ বুধবার রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মনজুরুলের গ্রেপ্তারের খবর প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
শিশু শাহাদাত হোসেনকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনার করা দুই মামলায় ক্ষমতাসীন দলের এই সাংসদকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ-সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা আজ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের অবকাশকালীন বেঞ্চ। গত সোমবার হাইকোর্ট সাংসদ মনজুরুলের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশনা স্থগিত চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন তা স্থগিতের আদেশ দেন। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম পরে সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্ট সাংসদ মনজুরুল ইসলামকে আত্মসমর্পণের যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা আজ চেম্বার বিচারপতি স্থগিত করেছেন। এর ফলে সাংসদ মনজুরুলকে গ্রেপ্তারে আর কোনো বাধা নেই। তাঁকে গ্রেপ্তারে আদালতের কোনো পরোয়ানারও দরকার নেই। পুলিশ তাঁকে যখন যেখানে পাবে, সেখান থেকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। এরপরই রাতে গ্রেপ্তার হলেন গাইবান্ধা-১ আসনের এই সাংসদ।
২ অক্টোবর সাংসদ মনজুরুলের ছোড়া গুলিতে সুন্দরগঞ্জ গোপাল চরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শিশু শাহাদাত হোসেন (৯) আহত হয়। দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সে এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শাহাদাতের পরিবার থাকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের গোপালচরণ গ্রামে। ঘটনার দিন সকালে চাচা শাহজাহান আলীর সঙ্গে হাঁটতে বেরিয়েছিল শাহাদাত। সকাল পৌনে ছয়টার দিকে বাড়ির পাশে সুন্দরগঞ্জ-বামনডাঙ্গা সড়কে ব্র্যাক মোড় এলাকায় গুলিবর্ষণের ঘটনাটি ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংসদ মন্জুরুল ওই সড়ক দিয়ে পাজেরো চালিয়ে বামনডাঙ্গা থেকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহরে যাচ্ছিলেন। সাংসদ ব্র্যাক মোড় এলাকায় গিয়ে গাড়ি থামান এবং গাড়িতে বসে জানালা দিয়ে শাহাদাতের চাচা শাহজাহানকে ডাকেন। কিন্তু শাহজাহান ভয়ে দৌড় দিলে সাংসদ ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র বের করে শাহজাহানকে লক্ষ্য করে কয়েকটি গুলি ছোড়েন। দুটি গুলি শিশুটির ডান পায়ে ও একটি বাঁ পায়ে লাগে। এরপর স্থান ত্যাগ করেন সাংসদ। গুলির শব্দ পেয়ে স্থানীয় লোকজন ছুটে যান। তাঁরা শাহাদাতকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।