আদালতে বেকসুর খালাস ২৭৭ জনের উল্লাস

ডান্ডাবেরি পড়ানো অবস্থায় প্রিজনভ্যান থেকে আসামিদের নামানো হচ্ছে। ছবি: মনিরুল আলম
ডান্ডাবেরি পড়ানো অবস্থায় প্রিজনভ্যান থেকে আসামিদের নামানো হচ্ছে। ছবি: মনিরুল আলম

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় ২৭৭ জন বেকসুর খালাস পেয়েছেন। হত্যা মামলার বিচারে গঠিত বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান আজ মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতের কার্যক্রম দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শুরু হয়। নির্ধারিত সময়ের আড়াই ঘণ্টা পর আদালতের কার্যক্রম শুরু করায় বিচারক মো. আখতারুজ্জামান শুরুতেই দুঃখপ্রকাশ করেন। এরপর তিনি তাঁর পর্যবেক্ষণ দেন। এর পরই রায় ঘোষণা করা হয়।

রায় ঘোষণার পরপরই বেকসুর খালাস পাওয়া ব্যক্তিরা আদালতের ভেতরে উল্লাস প্রকাশ করেন। তাঁরা আঙুল উঁচিয়ে বিজয়সূচক চিহ্ন দেখান। পরে তাঁদের গাড়িতে করে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহের নামে পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটেছিল এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। বিচারের মুখোমুখি করা হয় বিডিআর জওয়ানসহ ৮৫০ জনকে। আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হত্যা মামলা।

এ ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানার তত্কালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নবোজ্যোতি খীসা একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ মামলাটি তদন্ত করেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন ২০০ কর্মকর্তা। ৫০০ দিন তদন্তের পর ২০১০ সালের ১২ জুলাই এ আদালতে হত্যা এবং অস্ত্র-বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি অভিযোগপত্র জমা দেয় সিআইডি। এতে ৮২৪ জনকে আসামি করা হয়। পরে অধিকতর তদন্তে আরও ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে বর্ধিত অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। বিএনপির নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা তোরাব আলীসহ সব মিলে আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৫০। বিচার চলাকালে মারা গেছেন চারজন।

২০১১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মামলার বিচার শুরু হয়। চার বছর আট মাসে মামলাটি ২৩২ কার্যদিবস অতিক্রম করে। আজ রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হলো এ মামলার সব কার্যক্রম।