সব সংকট কেটে যাবে

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং সাংসদ তোফায়েল আহমেদ। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের নেতা। ১৯৭০ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি নিজ জেলা ভোলার নির্বাচনী এলাকা থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি ছিলেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী। গত ২৪ অক্টোবর তিনি কথা বলেন প্রথম আলোর সঙ্গে।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আব্দুল কাইয়ুম

তোফায়েল আহমেদ। ছবি: সাজিদ হোসেন
তোফায়েল আহমেদ। ছবি: সাজিদ হোসেন

প্রথম আলো: নির্বাচন নিয়ে দেশ কি সংঘাতের দিকে যাচ্ছে?

তোফায়েল আহমেদ: আমরা তো দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চাই না। সবার প্রত্যাশা এবং আমরাও চাই সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন। বিএনপি নির্বাচনে এলেই তো আর সংঘাতের প্রশ্ন থাকে না।

প্রথম আলো: বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। ওরা তো কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। আওয়ামী লীগ কি এ প্রশ্নে সমঝোতা করবে?

তোফায়েল আহমেদ: সংবিধানের বাইরে যাওয়া যাবে না। বিশ্বের সব দেশে যদি নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে পারে, আমাদের দেশে কেন হবে না।

প্রথম আলো: আমাদের দেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে কারচুপির আশঙ্কা থাকে বলেই তো ১৯৯৬ সালে আপনারা আন্দোলন করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আদায় করেছিলেন?

তোফায়েল আহমেদ: হ্যাঁ, করেছিলাম। কিন্তু নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের আগে তিন জোটের রূপরেখা প্রণয়নের সময় একটা সিদ্ধান্ত ছিল যে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে তিনটি নির্বাচন হবে। ১৯৯১ সালের নির্বাচন তো আসলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারই ছিল। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনও সে রকমই ছিল। অবশ্য অনেকে ওই সরকারকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলে স্বীকার করেন না। যা-ই হোক, তিনটি নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছে। এখন সংবিধান সংশোধনের পর আর তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকারব্যবস্থার সুযোগ কোথায়?

প্রথম আলো: তিনটি নির্বাচনের কথা কি তিন জোটের রূপরেখায় ছিল?

তোফায়েল আহমেদ: সে রকম একটা ধারণা সেখানে ছিল। কিন্তু এখন সে কথা বলতে গেল ওরা বলে, সংবিধান সংশোধনীর সময় তো সে কথা লেখা হয়নি!

প্রথম আলো: সংসদ বহাল রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হতে পারে?

তোফায়েল আহমেদ: কেন, ভারতে তো ১৯৫২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ১৪টি নির্বাচনের মধ্যে আটটি নির্বাচনই হয়েছে সংসদ বহাল থাকা অবস্থায়। বাকি ছয়টির ক্ষেত্রে মেয়াদ পূর্তির আগেই পার্লামেন্ট ভেঙে গিয়েছিল বলে সংসদ রেখে নির্বাচনের প্রশ্ন ছিল না। এবারের ১৫তম নির্বাচনও সংসদ বহাল রেখেই হতে যাচ্ছে। সেখানে সংসদ রেখে নির্বাচন নিয়ে তো প্রশ্ন ওঠেনি। তাহলে আমাদের সমস্যা কোথায়? সংসদ পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়, সে ক্ষেত্রে কেন নির্বাচনের জন্য মেয়াদপূর্তির আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে? আমরা চাই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হোক।

প্রথম আলো: আপনিই তো বললেন সবাইকে নিয়ে নির্বাচনের কথা। সমঝোতার জন্য কি সংসদ ভাঙা যায় না?

তোফায়েল আহমেদ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো রাজিই ছিলেন। সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে চাই। অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভায় বিএনপির সদস্যও থাকবেন। তিনি বলেছিলেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সংসদ মুলতবি হবে।

প্রথম আলো: বেশ তো, সেটাই হোক?

তোফায়েল আহমেদ: কীভাবে হবে? বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া তো সে প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। বরং হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির আগের দিন ৪ মে শাপলা চত্বরে সমাবেশ করে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিলেন। তিনি সরকারের পতন ঘটাতে চেয়েছিলেন। এরপর আবার আগের প্রস্তাব থাকে নাকি?

প্রথম আলো: তাহলে সমঝোতার সম্ভাবনা কি থাকছে না?

তোফায়েল আহমেদ: সমঝোতা নিশ্চয়ই হতে পারে। তবে বিএনপির কথামতো সংবিধান সংশোধন করে নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। এর দরকারও নেই। বিএনপি নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচন করবে না বলছে, কিন্তু সংবিধানে সে সুযোগ নেই। তার পরও প্রধানমন্ত্রী যে সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়েছেন, সেটা মেনে নিলে সংকটের সমাধান হতে পারে।

প্রথম আলো: দুই পক্ষই অনড় থাকলে চলবে কীভাবে?

তোফায়েল আহমেদ: আমাদের সরকারের আমলে গত প্রায় পাঁচ বছরে পাঁচ হাজার ৭৭৫টি স্থানীয় সরকার নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। বিএনপির প্রার্থীরা অনেক স্থানে জয়ী হয়েছেন। সরকার হস্তক্ষেপ করেনি। বিএনপির মওদুদ আহমদ ও জমির উদ্দিন সরকার বগুড়ায় উপনির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। আরও কয়েকটি উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। সম্প্রতি পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। কোনো হস্তক্ষেপের ঘটনা নেই। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেছে। তাহলে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করলে বিএনপিই তো লাভবান হবে। কেন ওরা করতে চায় না? এখন বিএনপি নির্বাচনে এলে সুন্দর নির্বাচন হতে পারে।

প্রথম আলো: একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশে রাজনৈতিক ঐক্য ছিল, এখন নেই। গত ৪২ বছরে দেশ ও দেশের রাজনীতির পরিবর্তন আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

তোফায়েল আহমেদ: এই দীর্ঘ সময়ে দেশ অনেক এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশ এখন সম্ভাবনাময় দেশ, কোনো সন্দেহ নেই। ১৯৭২-৭৩ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল মাত্র ২০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। আর এখন রপ্তানি হয় ২৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। যেখানে আমাদের ৫০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ছিল না, সেখানে এখন আমাদের বৈদেশিক মুদ্রাভান্ডারে রয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি। আমাদের মানবসম্পদ রপ্তানি বলতে গেলে ছিলই না। আর এখন ১৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশ থেকে আমাদের ভাইয়েরা অর্জন করে আনেন। জিডিপি গ্রোথ (মোট দেশজ আয়ের প্রবৃদ্ধি) গড়ে ৬ শতাংশের বেশি। যেখানে রাস্তাঘাট, সেতু-কালভার্ট কিচ্ছু ছিল না, সেখানে আজ বাংলাদেশে যেখানে যেতে চান, গাড়িতে যেতে পারেন। উন্নতি অনেক হয়েছে।

প্রথম আলো: আর রাজনীতি?

তোফায়েল আহমেদ: আমরা উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান দেখেছি। সত্তরের নির্বাচন দেখেছি। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। আগে রাজনীতি করতেন রাজনীতিবিদেরা। রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে নিষ্ঠা ছিল, সততা ছিল, আদর্শ ছিল, লক্ষ্য ছিল। আজ আমরা অনেক দূরে সরে গেছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর একজন সেনাশাসক দম্ভোক্তি করে বলেছিলেন, ‘আমি রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতিকে কঠিন করে দিয়ে যাব।’ আসলেই রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন হয়েছে।

আগের দিনে, সত্তরের নির্বাচনে যাঁরা এমএনএ-এমপিএ হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কজন ব্যবসায়ী ছিলেন? রাজপথের লড়াকু সৈনিকেরা, যাঁরা আন্দোলন করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, জেল খেটেছেন, তাঁরাই নির্বাচন করেছেন। সাংসদ হয়েছেন। তিয়াত্তরে তাঁরাই নির্বাচন করেছেন এবং বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভা যদি আপনি দেখেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এইচ এম কামরুজ্জামান থেকে শুরু করে সবাই রাজনীতিবিদ ছিলেন।

আর তখন ছাত্ররাজনীতি ছিল কলুষমুক্ত, আদর্শভিত্তিক। লক্ষ্য নির্ধারণ করে আমরা আন্দোলন করতাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগ কোথায়, আমরা এখনো চিনি না। টেন্ডারবাজি, দিস অ্যান্ড দ্যাট, এসব ছাত্র আন্দোলনে তখন ঢুকতে পারেনি। নৈতিকতা বজায় রেখে আমরা ছাত্ররাজনীতি করেছি, জাতীয় রাজনীতি করেছি।

এখন আমাদের নৈতিকতার অবক্ষয় হয়েছে। আমাদের হূদয়ের মধ্যে মানুষের প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা ছিল, সেটা কমে গেছে। আমি মনে করি, এভাবে চলবে না। অনির্দিষ্ট কালের জন্য এ রকম চলতে পারে না। রক্তের মধ্য দিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে দেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে, লাখ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে, সেই দেশ যে একদিন সঠিক পথে এগিয়ে যাবে, এতে আমার সন্দেহ নেই।

প্রথম আলো: দেশের উন্নয়নের জন্য তো অন্তত রাজনৈতিক ঐক্য দরকার?

তোফায়েল আহমেদ: তা তো বটেই। মৌলিক জাতীয় ইস্যুতে রাজনৈতিক ঐক্য তো অবশ্যই দরকার। ভারতে দেখুন, অন্যান্য দেশে দেখুন, জাতীয় ইস্যুতে দল এবং মতের ভিন্নতা সত্ত্বেও ঐকমত্য সৃষ্টি হয়। কিন্তু আমরা সেখান থেকে অনেক দূরে সরে গেছি। ক্ষমতাসীন দল যদি কোনো ভালো কাজ করে, বিরোধী দল তার সমালোচনা করে। বিরোধী দল যদি একটা ভালো প্রস্তাব করে, সরকারি দল সেটা প্রত্যাখ্যান করে। সুতরাং জাতীয় একটা যে ঐকমত্য, সেটা কোনো ইস্যুতেই নেই। এটা দুর্ভাগ্যজনক।

আমরা দেখেছি, কারগিল যুদ্ধের সময় ভারতে সরকারি দল, বিরোধী দল বলে কিছু ছিল না। সমগ্র জাতি ছিল ঐক্যবদ্ধ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও সমগ্র জাতি, কিছু রাজাকার-আলবদর-স্বাধীনতাবিরোধী লোকজন ছাড়া, সবাই জাতির জনকের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ ছিল।

বাংলাদেশ কিন্তু বীরের দেশ। বাংলাদেশের মানুষ চমৎকার। সঠিক সময়ে কিন্তু তারা তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। আমাদের সংসদ আছে। কিন্তু বিরোধী দল আসে না। আজ যদি আমরা, সব রাজনৈতিক দল মিলে সংসদকে সব কাজের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে পারতাম, তাহলে রাজপথে এই হানাহানি থাকত না।

প্রথম আলো: যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন?

তোফায়েল আহমেদ: না, না। প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। এই বিচারপ্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। এটা দেশে-বিদেশে সর্বমহলে স্বীকৃত।

প্রথম আলো: কোন কোন ইস্যুতে রাজনৈতিক ঐক্য হতে পারে?

তোফায়েল আহমেদ: আমি সুনির্দিষ্ট কোনো ইস্যুর কথা বলতে চাই না। অনেক ইস্যুই তো আছে, যেগুলোতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারি। আজকে ধরুন, এই যে পানির সমস্যা, তিস্তার পানিবণ্টন, এ বিষয়ে সংসদে আমরা একমত হয়ে কাজ করতে পারি। পররাষ্ট্রনীতি, জাতির পুনর্গঠন নিয়ে আমরা একমত হতে পারি।

আমাদের ভুল-ত্রুটি আছে, ব্যর্থতা আছে। কিন্তু অনেক সাফল্যও আছে। অথচ বিরোধী দল সংসদে কখনো কোনো প্রশংসা করে না। এখানে আমরা খুব দৈন্যে ভুগছি।

প্রথম আলো: আমরা বলি, সব সংকটই একধরনের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। এখন রাজনীতিতে ও জাতীয় ক্ষেত্রে চলছে সংকট। এর মধ্য দিয়ে কি কোনো সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে?

তোফায়েল আহমেদ: আমি তো মনে করি, সংকট সৃষ্টি হয়, কিন্তু তা চিরস্থায়ী হয় না। সংকট কেটে যাবে। আমরা অতীতে অনেকবার সংকটের মুখে পড়েছি। কিন্তু আবার সংকট থেকে মুক্তি পেয়েছি। আমি মনে করি, সব সংকট কেটে যাবে, যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়। আমরা কেন একে অপরকে বিশ্বাস করতে পারি না? আজ এত রেডিও-টিভি-পত্রিকা, এত নির্বাচন পর্যবেক্ষক, এর মধ্যে কোনো দল নির্বাচনে কারচুপি করে পার পাবে নাকি? আর এটা করলে তার পরিণামও শুভ হয় না।

আমি একটা আশার আলো দেখি। বিএনপি যদি উপলব্ধি করে যে পাঁচটা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জিতেছি, আমরা এই নির্বাচন করব, যা হওয়ার হবে! তাহলে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।

প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।

তোফায়েল আহমেদ: ধন্যবাদ।