কমিটি গঠনে টাকা আদায়ের অভিযোগ

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়কের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইউনিয়নে কমিটি গঠনের জন্য টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে সংগঠনে ত্যাগী ও যোগ্য নেতারা নেতৃত্বে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পাশাপাশি এতে দলের সুনামও ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

ইউনিয়ন পর্যায়ের পাঁচ-ছয়জন নেতা-কর্মীর অভিযোগ, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের যুবদলের কমিটির অনুমোদন দিতে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক সরদার মো. খুররম পদপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করছেন। যাঁরা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বা টাকা দিতে পারছেন না, তাঁরা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও পদবঞ্চিত হচ্ছেন। ওই সব ইউনিয়নের কমিটি গঠনে কোনো সম্মেলনও হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক সরদার মো. খুররমের মুঠোফোনে বলেন, ‘কমিটি গঠনে টাকা নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। যারা এসব ছড়াচ্ছেন তাঁরা উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সময় আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে না থাকতে পেরে তাঁরা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’

নিগুয়ারী ইউনিয়নের যুবদলের সভাপতি প্রার্থী ইয়াছিন খান বলেন, ‘গত রোজার ঈদের আগে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক সরদার মো. খুররম মুঠোফোনে বলেন, সভাপতি হতে চাইলে তিনের মতো টাকা নিয়ে দেখা করেন। পরে তিন হাজার টাকা নিয়ে আমি তাঁর (খুররম) সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হন। তিনি বলেন, তিন মানে তিন হাজার না, তিন লাখ।’

মশাখালী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি প্রার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন কমিটি জমা দেওয়ার পর খুররম তাঁর কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। তিনি এক লাখ টাকা দিতে রাজি হলেও দুই লাখ টাকার কমে কমিটি দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। টাকার বিনিময়ে কমিটি গঠনের কাজ প্রায় চূড়ান্ত।

উপজেলা যুবদলের পাঁচ-ছয়জন নেতা-কর্মী জানান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি সম্প্রতি মশাখালী, যশরা, রাওনা, নিগুয়ারী, টাঙ্গাব ও পাইথল ইউনিয়ন যুবদলের কমিটি প্রায় চূড়ান্ত করেছে। ওই সব কমিটি গঠনে কয়েক লাখ টাকার বিনিময় হয়েছে। ওই সব ইউনিয়ন কমিটিতে পদ পাওয়ার বিষয়টি রীতিমতো নিলামে উঠেছিল। যাঁরা বেশি টাকা দিয়েছেন তাঁরাই পদ পেয়েছেন, ত্যাগীদের মূল্যায়ন হয়নি।

উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহ আকরাম খান বলেন, ‘টাকা নেওয়ার অভিযোগ শুনেছি। কিন্তু কে টাকা দিয়েছে আর কে নিয়েছে সে বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।’

গফরগাঁও উপজেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ সদস্য ও পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের যুবদলের কমিটি গঠনের কাজ প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কমিটি-বাণিজ্যের বিষয়টি “ওপেন সিক্রেট”। জেলা যুবদলের কাছেও এ অভিযোগ গেছে।’

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান খান বলেন, ‘অভিযোগ আমিও পেয়েছি। তদন্ত করে দেখতে হবে অভিযোগ কতটুকু সত্য। সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই দলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’