জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দেশের সব অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। একই সঙ্গে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য বিস্তৃত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তাঁরা। আজ বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। 


ঐক্য ন্যাপের আহ্বায়ক পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিদের রাজনৈতিক সংগঠন হচ্ছে জামায়াতে ইসলামি। তাদের ১২৫টা সহযোগী সংগঠন আছে। পাঁচ লাখ কোটি টাকা তাদের মূলধন। জামায়াত আর আইএস মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি হলেও আদর্শিকভাবে প্রধান শত্রু জামায়াত। তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে অ্যান্টি টেররিজম স্পেশাল পুলিশ ফোর্স গঠনের দাবি জানান।

আলোচনা সভার সভাপতির বক্তব্যে প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা অজয় রায় বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বন্ধু ছিল না। সুতরাং তাদের দিক থেকে ষড়যন্ত্র হবে। তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, জঙ্গিবাদকে না বলুন, জামায়াতকে না বলুন।

আলোচনা সভায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে নূর আহমেদ বকুল বলেন, দুই বিদেশি নাগরিক হত্যা, পুলিশ হত্যা ও আশুরার মিছিলে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় বলা যায়, এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্র এবং সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। এ অবস্থায় দেশের সব গণতান্ত্রিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নারী-শ্রমিক, যুব-ছাত্র ও পেশাজীবী সংগঠনের উচিত দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘জেনারেল জিয়ার নীরব সমর্থনে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সন্ত্রাসের শুরু। জিয়া সন্ত্রাস নামক যে বিষ বৃক্ষ রোপণ করে গেছেন তা সহসা এই দেশ থেকে উৎখাত হবে বলে আমার মনে হয় না।’ তিনি সম্প্রতি দুই বিদেশি নাগরিকের হত্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে দেশি কিছু সংগঠনের সঙ্গে আমেরিকার মতো কিছু মোড়ল দেশেরও সম্পর্ক থাকতে পারে। বাংলাদেশের অগ্রগতি ও বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। দেশের এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন।

জাসদের শরিফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, উন্নয়নকে সর্বাগ্রে স্থান দিয়ে গণতন্ত্রকে দুই নম্বরে নেওয়ার ধারণা ভুল। উন্নয়ন করলেই সবকিছু ঠিক আছে এটা ভাবা ঠিক না। এটা মনে রাখতে হবে যে গণতন্ত্র বিযুক্ত উন্নয়ন আমাদের বিপদে ফেলতে পারে।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, সরকার যদি মনে করে, বিএনপিকে আগে শেষ করে, তারপর জামায়াতকে ধরা হবে তাহলে তা ভুল হবে। সরকারের এই ভুলের লক্ষণগুলো দেখা যাচ্ছে। জামায়াত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটি অগণতান্ত্রিক শক্তিকে গণতান্ত্রিক সুবিধা দেওয়া যাবে না।

জাসদের নাজমূল হক প্রধান বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হতে হবে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে বিচার করতে হবে।