নিহত প্রকাশকের শরীরে ছিল তিনটি বড় আঘাত

দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন দীপনের ঘাড়ে ও শরীরে তিনটি বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এই আঘাতগুলো খুব ধারালো অস্ত্র দিয়ে করা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান কাজী মো. আবু শামা আজ রোববার প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ময়নাতদন্তকারী এই চিকিৎ​সক বলেন, হামলার ধরন দেখে মনে হয়েছে তাঁকে (ফয়সাল) উপুড় করে আঘাত করা হয়েছে। হামলার পর তাঁর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।

নৃশংস জোড়া হামলা চালিয়ে রাজধানীতে গতকাল শনিবার এক প্রকাশককে হত্যা এবং আরেক প্রকাশকসহ দুই কবি ও ব্লগারকে গুরুতর আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। বেলা আড়াইটার দিকে লালমাটিয়ায় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। সেখান থেকে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আহমেদুর রশীদ টুটুলসহ তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে যখন চিকিৎসা চলছিল; তখন জানা গেল, শাহবাগে আজিজ কো-অপারেটিভ সুপার মার্কেটে আরেক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতির কার্যালয়ের ভেতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ফয়সাল আরেফিন দীপন। দুটি ক্ষেত্রেই হামলার পর কার্যালয়ের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।


পুলিশ ও গোয়েন্দাদের ধারণা, এই চারজনের মধ্যে ঘাতকদের লক্ষ্য ছিল দুজন—ফয়সাল আরেফিন ও আহমেদুর রশীদ। এই দুজনই গত ফেব্রুয়ারিতে একুশে বইমেলা থেকে বের হয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত বিজ্ঞান লেখক ও মুক্তমন ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়ের বইয়ের প্রকাশক।


গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এবং ৩ অক্টোবর রংপুরে যথাক্রমে দুই বিদেশি নাগরিক সিজার তাবেলা ও কুনিও হোশিকে হত্যা, ৫ অক্টোবর ঢাকায় পিডিবির সাবেক চেয়ারম্যান খিজির খানকে হত্যা এবং পাবনার ঈশ্বরদীতে একজন ধর্মযাজক লুক সরকারকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ২৩ অক্টোবর পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে হামলায় দুজন নিহত হয়। এসবের রেশ না কাটতেই গতকালের এই নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটে।


পাঁচজন ব্লগারকে এর আগে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো ঘটনার বিচারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। নিহত ব্লগাররা হলেন আহমেদ রাজীব হায়দার, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান, অনন্ত বিজয় দাশ ও নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়।