এসপির প্রতিরোধের ডাকে মাদক ব্যবসায়ীদের 'আস্তানা' ভাঙচুর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের ভাদুঘর এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে আট ব্যক্তির ‘আস্তানা’ ভাঙচুর করেছেন স্থানীয় লোকজন। গতকাল বৃহস্পতিবার কমিউনিটি পুলিশের উদ্যোগে মাদকবিরোধী সমাবেশে প্রতিরোধের ডাক দেওয়ার পর ওই হামলা হয়।

এদিকে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় পুলিশের টহলরত একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে পাঁচ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি ও পুলিশ আহত হওয়ার ঘটনায় একটি মামলা হয়। বেলা ১১টায় ভাদুঘর বাজার এলাকায় ভাদুঘর কমিউনিটি পুলিশের উদ্যোগে মাদকবিরোধী সমাবেশ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘সমষ্টিগতভাবে উদ্যোগ নিলে মাদক ব্যবসা বন্ধ হয়ে আসবে। এখন মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সময়। প্রতিটি পাড়া, মহল্লা ও এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে না তুলতে পারলে মাদক বন্ধ হবে না।’

সমাবেশ থেকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে স্থানীয় কয়েকজনের নাম বলা হয়। যাঁদের নাম বলা হয়, তাঁরা হলেন শামীম মিয়া, সুন্দরী বেগম, সোহাগ মিয়া, এমরান হোসেন, মহসিন মিয়া, মোস্তাক আহমেদ, কালা রিশি ও স্থানীয় কুতুব মিয়ার ছেলে (এই ব্যক্তির নাম জানা যায়নি)। পুলিশ বলেছে, সমাবেশ শেষে স্থানীয় বাসিন্দারা এই আটজনের স্থাপনায় ভাঙচুর চালান। পুলিশের ভাষ্য, স্থাপনাগুলোতে কেউ বাস করেন না। সেখানে মাদক কেনাবেচা হচ্ছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার সহকারী পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশ শেষে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ওই স্থাপনাগুলোতে ভাঙচুর করেন।

গত ১৭ অক্টোবর কমিউনিটি পুলিশের উদ্যোগে শহরের শিমরাইলকান্দি এলাকায় মাদকবিরোধী সমাবেশ শেষেও মাদক ব্যবসার অভিযোগে তিনজনের বাড়িঘর ও ‘আস্তানা’ ভাঙচুর করা হয়।

এদিকে ঘাটুরা এলাকা থেকে আটক কাজী নাহিদ ও তাঁর বাবা কাজী মোশারফকে পুলিশের গাড়িতে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার বাকি চারজনকে দুটি মাদকের মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টহলরত একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে পুলিশের এক কর্মকর্তাসহ পাঁচ সদস্য আহত হন। পুলিশের দাবি, ঘাটুরা এলাকার কাজীবাড়ির কয়েক ব্যক্তি সুহিলপুরের স্বপন মিয়ার বাড়ি থেকে মাদকদ্রব্য কেনেন। তাঁরা মাদক ও অস্ত্র নিয়ে একটি গাড়িতে শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। ওই গাড়িকে ধাওয়া করলে গাড়ির ভেতর থেকে পুলিশের টহল ভ্যানে গুলি করলে ভ্যানটি খাদে পড়ে যায়। পরে পুলিশ মাদক ও অস্ত্র বহনকারী ওই গাড়িসহ ছয়জনকে আটক করে।

ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান সহকারী পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এখনো নিশ্চিত নন পুলিশের গাড়িতে হামলা হয়েছিল কি না। তদন্ত চলছে। শিগগিরই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।