সহিংসতা মৃত্যুর কাছেই পাঠাল কিশোর মনিরকে

মনির হোসেন
মনির হোসেন

হরতালের সমর্থকদের সহিংসতার জের শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছেই পাঠাল অগ্নিদগ্ধ কিশোর মনির হোসেনকে (১৫)। টানা তিন দিন লড়াই করে আজ বৃহস্পতিবার ভোররাত সোয়া চারটার দিকে মৃত্যুর কাছে হার মেনেছে মনির। আগুনে শরীরের ৯৫ ভাগ ঝলসে যাওয়া এই কিশোর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিত্সাধীন ছিল। বার্ন ইউনিটের চিকিত্সক পার্থ শঙ্কর প্রামাণিক তার মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, ‘কারও শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। সাধারণত শরীরের ১৪ ভাগ পুড়ে গেলেই আশঙ্কাজনক মনে করা হয়। তার পরও আমরা চেষ্টা করেছি।’

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের ৬০ ঘণ্টার হরতাল চলাকালে গত সোমবার সকাল ১০টার দিকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় জাতীয় আইন কলেজের পাশে হরতালের সমর্থকদের দেওয়া আগুনে ঝলসে যায় এই কিশোরের শরীর। মনির গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বড় কাঞ্চনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। কালিয়াকৈর উপজেলার চাপাইর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সেতু প্রথম আলো ডটকমকে মনিরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মনিরের লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। হাসপাতাল থেকে লাশটি বাড়ি নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম কামরুজ্জামান বলেন, ওই ঘটনায় জয়দেবপুর থানার পপরিদর্শক (এসআই) মো. হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমির আবুল হাসেম খান, সাধারণ সম্পাদক এস এম সানাউল্লাহ, সহসাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, সাংগঠনিক ও প্রচার সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর শহর জামায়াতের সভাপতি খায়রুল হাসান, বিএনপির নেতা সাবেক কাউলতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন, গাজীপুর সিটির ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তানবির হমেদসহ ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে ওসি জানালেন। এর আগে গাজীপুর সদর উপজেলার ভোগড়া বাইপাস এলাকায় হরতালের সমর্থকদের দেওয়া আগুনে বাসচালক নজরুল ইসলামের মৃত্যু হয়। তিনি সদর উপজেলার হায়দরাবাদ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।