মণ্ডপ ভেঙে দিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড

নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কালীপূজার মণ্ডপ ভেঙে দিয়ে সেই জায়গায় দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও শেখহাটি বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মিন্টু দাস বলেন, বাজার বণিক সমিতির উদ্যোগে কালীপূজা উদ্যাপনে গত ২৬ অক্টোবর সভা করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট পূজা উদ্যাপন কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা বাজারের কৃষি ব্যাংকের পূর্ব পাশে খাস জমির ওপর বাজারের ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে বাঁশ-খুঁটি পুঁতে অস্থায়ীভাবে একটি মণ্ডপ তৈরি করেন। ১ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী মণ্ডপটি ভেঙে ফেলেন।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের সামনেই ওই মণ্ডপ ভাঙার ঘটনা ঘটলেও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নেননি। তবে শেখহাটি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ফারুক হোসেন বলেন, ‘কে বা কারা মণ্ডপের বাঁশ-খুঁটি ভেঙেছে তা জানি না। কেউ অভিযোগও করেননি।’
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, সেখানে মণ্ডপের কোনো চিহ্ন নেই। পরিষ্কার করা স্থানে বাঁশ-খুঁটির ওপর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডিজিটাল ব্যানার টানানো রয়েছে। বাজারের চা বিক্রেতা আবু সাঈদ বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কাজে আমিও ছিলাম। কিছু আওয়ামী লীগ নেতা তা মেনে নিতে পারেননি। তাঁরা মণ্ডপ ভেঙে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ব্যানার টানিয়ে দেন।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পল্লিচিকিৎসক এনামুল হক বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা শহীদ মোল্যা, ফারুক মোল্যা, হাসমত বাদ্যকারসহ আওয়ামী লীগ কর্মী আলমগীর হোসেন, জালাল শেখ, রবি শেখ এবং আরও কয়েকজন মিলে ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাপস পাঠক বলেন, ‘শহীদ মোল্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, ফারুক মোল্যা সাংগঠনিক সম্পাদক, হাসমত বাদ্যকার স্বেচ্ছাসেবক লীগের ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক। পূজামণ্ডপ ভাঙার বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু পূজা উদ্যাপন কমিটি জেলা পর্যায়ের নেতাদের কাছে অভিযোগ করায় এ বিষয়ে আর মাথা ঘামাইনি।’
শহীদ মোল্যা, ফারুক মোল্যা, হাসমতসহ অন্যদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচীন চক্রবর্তী বলেন, ‘এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস বোস বলেন, যাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
জেলা প্রশাসক হেলাল মাহামুদ শরীফ বলেন, বিষয়টি দেখভালের জন্য ইউএনওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’