সাংসদ-চেয়ারম্যান দ্বন্দ্বের আশঙ্কায় জেলা পরিষদ বিল প্রত্যাহার

জেলা পরিষদ আইন সংশোধন বিল সংসদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ সোমবার স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিল প্রত্যাহারের জন্য প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। 

বিলটি প্রত্যাহারের নোটিশ সম্পূরক কার্যসূচি হিসেবে দিনের কার্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির একাধিক সদস্য জানান, আজ সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের সুপারিশে বিলটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। কমিটি আশঙ্কা করছে, জেলা পরিষদে নির্বাচিত চেয়ারম্যান দায়িত্ব নিলে তাঁর সঙ্গে এলাকার সাংসদের দ্বন্দ্ব তৈরি হবে।
এ ছাড়া আজ পৌরসভা আইন সংশোধনের জন্য স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) বিল ২০১৫ যাচাইবাছাই করে চূড়ান্ত¯করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। কমিটির সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে কমিটির সদস্য স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ফজলে হোসেন বাদশা, আইন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এবং বিশেষ আমন্ত্রণে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা প্রথম আলোকে বলেন, জেলা পরিষদ আইন আপাতত পাসের জন্য উত্থাপন না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে পরে আলোচনা হবে। তবে পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশন আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কমিটি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেছে, ‘শুধু চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে দলীয়ভাবে নির্বাচন হবে। পরিষদের সদস্য বা কাউন্সিলর পদের নির্বাচন হবে নির্দলীয়। এ বিষয়ে আমার মত ছিল, একই পরিষদে দুই ধরনের আইন হতে পারে না। এ নিয়ে পরে আদালতে মামলা হলে পুরো নির্বাচনই আটকে যাবে। কিন্তু আইনমন্ত্রী বলেন, এ নিয়ে কোনো আইনি জটিলতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।’
১১ নভেম্বর স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, সিটি করপোরেশন ও জেলা পরিষদ আইন সংশোধনের জন্য সংসদে বিল উত্থাপন করেন। চারটি বিলেই বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান, মেয়র, সদস্য ও কাউন্সিলর পদে দলীয় পরিচয় ও প্রতীকে নির্বাচন হবে।
গতকাল রোববার উত্থাপিত পৌরসভা আইন সংশোধন বিলে বলা হয়েছে, মেয়র পদে দলীয়ভাবে এবং কাউন্সিলর পদে বিদ্যমান পদ্ধতি অর্থাৎ নির্দলীয়ভাবে নির্বাচন হবে। আজকের বৈঠকে কমিটি ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা ও সিটি করপোরেশন আইন পৌরসভা আইনের অনুকরণে করার সুপারিশ করেছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, সাংসদদের আপত্তিতে সংসদীয় কমিটি জেলা পরিষদ আইন সংশোধনের কাজটি আপাতত স্থগিতের সুপারিশ করেছে। কমিটি মনে করে, একটি জেলায় একাধিক সাংসদ আছেন। পরিষদ গঠন হলে নির্বাচিত চেয়ারম্যান সাংসদদের ওপর খবরদারি করতে পারেন। এ জন্য সাংসদেরা এই বিলটি উত্থাপন না করার জন্য কমিটির কাছে অনুরোধ করেছেন।