স্কুলছাত্র সাঈদ হত্যা মামলার বিচার শুরু

সিলেটের স্কুলছাত্র আবু সাঈদকে (৯) অপহরণ করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল এবাদুর রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রশীদ আসামিদের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন করেন।

এবাদুর ছাড়া অপর তিন আসামি হলেন জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক এন ইসলাম ওরফে রাকীব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কথিত ‘সোর্স’ আতাউর রহমান ওরফে গেদা ও জেলা ওলামা লীগের প্রচার সম্পাদক মহি হোসেন ওরফে মাসুম। এবাদুরের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জে। ২০১০ সাল থেকে তিনি মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ ছিলেন বিমানবন্দর থানায়। সাঈদের পরিবারের সঙ্গে এবাদুর পূর্বপরিচিত ছিলেন।

ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (স্পেশাল পিপি) আবদুল মালেক সাংবাদিকদের বলেন, আলোচিত এ ঘটনার প্রায় আট মাসের মাথায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার-প্রক্রিয়া শুরু হলো। ১৯ নভেম্বর মামলার প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয়েছে।

সিলেট নগরের রায়নগরের বাসিন্দা মতিন মিয়ার ছেলে ও রাজনগরের হাজি শাহ মীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আবু সাঈদ গত ১১ মার্চ অপহৃত হয়। অপহরণকারীরা ওই দিনই পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ১৪ মার্চ রায়নগরের পার্শ্ববর্তী কুমারপাড়ার ঝরনারপাড় মহল্লায় পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমানের বাসা থেকে সাঈদের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন মতিন মিয়া কোতোয়ালি থানায় ধরা পড়া তিনজন ও অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করে মামলা করেন।

গত ১১ মার্চ নগরের শাহ মীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আবু সাঈদ অপহৃত হয়। পরে অপহরণকারীরা তার পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ঘটনার তিন দিন পর ১৪ মার্চ নগরের ঝরনারপাড় এলাকায় এবাদুরের বাসা থেকে সাঈদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আটক করা হয় এবাদুরকে। লাশ উদ্ধারের পরপরই পুলিশকে দেওয়া এবাদুরের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ওই রাতেই জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক এন ইসলাম তালুকদার ওরফে রাকীব ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কথিত ‘সোর্স’ হিসেবে পরিচিত গেদা মিয়াকে আটক করে পুলিশ। রাকীবের বাড়ি সিলেটের ওসমানীনগরে। গেদা রায়নগরের পার্শ্ববর্তী কুমারপাড়ায় বসবাস করতেন।
পরদিন এ ঘটনায় সাঈদের বাবা মতিন মিয়ার দায়ের করা মামলায় এ তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং এবাদুরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরে তাঁরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ঘটনায় জড়িত জেলা ওলামা লীগের প্রচার সম্পাদক মহি হোসেন ওরফে মাসুম পলাতক ছিলেন।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ৮ নভেম্বর আদালত থেকে পলাতক মাসুমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। ১০ নভেম্বর মাসুম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।