যত্রতত্র আবর্জনা, অতিষ্ঠ বিয়ানীবাজার পৌরবাসী

সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরসভার হাসপাতাল সড়কের পাশে ময়লা–আবর্জনার স্তূপ। দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় এখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। গত রোববার তোলা ছবি l প্রথম আলো
সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরসভার হাসপাতাল সড়কের পাশে ময়লা–আবর্জনার স্তূপ। দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় এখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। গত রোববার তোলা ছবি l প্রথম আলো

সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌর শহরের যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হচ্ছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় পৌরবাসীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া পৌর এলাকার পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থাও ভালো নয়।
পৌর প্রশাসক তফাজ্জুল হোসেন বলেন, ‘সব সমস্যার সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি। কলেজ সড়কসহ কয়েকটি এলাকায় পাকা নালা তৈরির কাজ চলছে। ২০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়মিত শহর পরিষ্কারের কাজ করছেন। শহরটি যত্রতত্র আবর্জনা ফেলে রাখার তথ্য সঠিক নয়।’
পৌরসভা সূত্র জানায়, ২০০১ সালে দ্বিতীয় শ্রেণির এই পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আয়তন ১৮ দশমিক ৫ বর্গকিলোমিটার। এখানে প্রায় ২৫ হাজার বাসিন্দা বাস করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আইনি জটিলতার কারণে এখনো নির্বাচন হয়নি। পৌর প্রশাসক দিয়ে চলছে পৌরসভাটি।
গত রোববার বিয়ানীবাজার পৌরসভার অলিগলি ঘুরে চারটি ডাস্টবিন চোখে পড়েছে। যে কয়েকটি নালা রয়েছে, সেগুলোও দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করা হচ্ছে না বলে অন্তত ২১ জন বাসিন্দা জানিয়েছেন।
পৌরসভার সচিব নিকুঞ্জ ব্যানার্জি দাবি করেন, পৌরসভায় ১০টি স্থায়ী ডাস্টবিন ও এর বাইরে ড্রাম দিয়ে তৈরি আরও কিছু অস্থায়ী ডাস্টবিন রয়েছে। নিয়মিত ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে।
তবে পৌর সচিবের ওই দাবি নাকচ করে দিয়ে পৌরসভার খাসা গ্রামের আবুল হাসান বলেন, এত অপরিচ্ছন্ন শহর বোধ হয় দেশে কোথাও নেই। যে যেখানে খুশি সেখানেই আবর্জনা ফেলে। পুরো শহরটা যেন আবর্জনার ভাগাড়। পৌরসভার ১৭ জন বাসিন্দা বলেন, শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এবং পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের কলেজ সড়ক, হাসপাতাল সড়ক, উত্তর বাজার, খশির আবদুল্লাহপুর, খশির নতুনবাজার, প্রধান সড়ক, সুপাতলা এলাকার যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা পড়ে আছে। হাসপাতাল সড়কের মাদ্রাসা মার্কেট-সংলগ্ন ফুটপাতে আবর্জনার কারণে চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
কলেজ সড়কে লোদী ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের স্বত্বাধিকারী কামরুল হাসান বলেন, শহরে সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে জলাবদ্ধতা হয়। বেশি বৃষ্টি হলে নর্দমার আবর্জনা ও নোংরা পানিতে সড়ক সয়লাব হয়ে যায়। মূল সড়কগুলোতে সড়কবাতি না থাকায় সন্ধ্যার পর অনেকে কেনাকাটা করতে বের হয় না।
প্রধান সড়ক এলাকায় কথা হয় গৃহিণী সাবেরা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, পৌর এলাকায় গণশৌচাগার না থাকায় পুরুষদের চেয়ে নারীরা বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
পৌর প্রশাসক বলেন, গণশৌচাগার নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পার্ক নির্মাণের জন্য একটি জায়গাও অধিগ্রহণ করা হয়েছে। শহরে সড়কবাতি লাগানোর প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।
পৌর প্রশাসক আরও বলেন, জলাবদ্ধতা ও পয়োনিষ্কাশনের সমস্যা সমাধানে কাজ করা হবে।