নির্বাচনে জিততে চাইলে জনগণের পক্ষ নিন

নারায়ণগঞ্জে নিহত মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেছেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জে জিততে চাইলে জনগণের পক্ষে অবস্থান নিন। গডফাদার শামীম ওসমানকে প্রত্যাখ্যান করুন। তবু খুনি ওসমান পরিবার থেকে কাউকে মনোনয়ন দিলে এখানে আপনার দলের কী পরিণতি হয় তা দেখতে পারবেন।’

ত্বকী হত্যার আট মাস পূর্তি ও খুনিদের ফাঁসির দাবিতে গতকাল শুক্রবার বিকেলে শহরের ৫ নম্বর ঘাটে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ আয়োজিত সমাবেশে রফিউর রাব্বি এসব কথা বলেন। ওই ঘাটের কাছে পাশে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর থেকে আট মাস আগে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল।

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, নারায়ণগঞ্জে আর খুনিদের পা ফেলতে দেওয়া হবে না। নারায়ণগঞ্জে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপদে রাখতে ও নগরবাসীর স্বার্থে গডফাদারদের কবর রচনা করে দিয়েই আন্দোলনের মাঠ ছাড়ব।

রাব্বি তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, দেশের কোনো সংস্থাই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না বা তাদের কাজ করতে দেওয়া হয় না। সরকার তাদের স্বার্থে তাদের প্রয়োজনে এসব সংস্থাকে ব্যবহার করে থাকে। তিনি বলেন, র‌্যাবের তদন্তে যখন দেখা গেল ত্বকী হত্যার সঙ্গে ওসমান পরিবারের সদস্যরা জড়িত, তখনই ওই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হালিম আজাদ, স্থানীয় দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এ বি সিদ্দিক, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক অঞ্জন দাস।

বক্তারা বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে র‌্যাব ত্বকী হত্যার তদন্ত শুরু করে অনেক দূর এগিয়েছিল। জাতীয় পার্টির সাংসদ নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে হানা দিয়ে অনেক আলামত উদ্ধার করেছে। অনেক আসামিকেও তারা গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু হঠাৎ করেই র‌্যাবের তদন্তে ভাটা পড়েছে। মনে হচ্ছে খুনিরা র‌্যাবের তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। তবে খুনি চক্রকে একদিন অবশ্যই কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক রোকন উদ্দিন আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, কণ্ঠমালা আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি প্রদীপ ঘোষ, সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়, জেলা খেলাঘরের সভাপতি রথীন চক্রবর্তী প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি মশাল মিছিল শহরের ৫ নম্বর ঘাট থেকে শুরু হয়ে শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়