বাংলাদেশ নিয়ে কাল ইউরোপের পার্লামেন্টে আলোচনা

বাংলাদেশের চলমান সংকটের অবসান এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সবগুলো রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সংলাপে বসতে সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পেশ করেছে ইউরোপীয় একটি রাজনৈতিক জোট। এ ছাড়া গণতান্ত্রিক সুশাসন পুনর্বহাল নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক পর্যালোচনার আহ্বানও দেওয়া হয়েছে ওই প্রস্তাবে।

গ্রুপ অব দ্য প্রগেসিভ অ্যালায়েন্স অব সোশ্যালিস্ট অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটস ইন দ্য ইউরোপীয় পার্লামেন্ট, যা এস অ্যান্ড ডি গ্রুপ নামে পরিচিত তারা গতকাল মঙ্গলবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টে পেশ করা প্রস্তাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের লঙ্ঘন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে এসব কথা বলেছে। একই দিনে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের আরও ছয়টি আলাদা রাজনৈতিক গোষ্ঠী এসব বিষয় ছাড়াও আরও কিছু বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। পৃথক পৃথক ওই প্রস্তাবের প্রেক্ষাপটে কাল বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসের স্থানীয় সময় সকাল ১০টার পর বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা হবে।

এস অ্যান্ড ডি গ্রুপের ওই প্রস্তাবে তাদের ভাষায় বাংলাদেশে মত প্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা লঙ্ঘনে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশক ও ব্লগারদের ওপর হামলা এবং তাঁদের হত্যায় নিন্দা জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি সম্প্রতি বাংলাদেশে বিদেশি হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানানো হয়েছে ওই প্রস্তাবে। এস অ্যান্ড ডির ওই প্রস্তাবে বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে প্রকাশক ও ব্লগারদের পাশাপাশি বিদেশি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে বিচারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কাছে দেওয়া প্রস্তাবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা পর্যবেক্ষণে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোকে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়া, গণমাধ্যমবিষয়ক নতুন নীতিমালা প্রত্যাহার এবং মত ও বাক প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এতে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার স্বার্থে সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক প্রতিবেদন ও নিবন্ধ প্রকাশের অভিযোগে সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, বন্ধ হওয়া গণমাধ্যম ও সামাজিক গণমাধ্যম অবিলম্বে চালুর আহ্বান জানানো হয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০১৫ এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনকে মত প্রকাশের স্বাধীনতার আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে মিল রাখা এবং রাষ্ট্রবিরোধী প্রকাশনার অভিযোগ প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের গুম নিয়ে তদন্তের জন্যও এতে আহ্বান জানানোর কথা বলা হয়েছে।