মিটার চুরি করে চাঁদাবাজি

জয়পুরহাট ও বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গভীর নলকূপ ও চালকলের মিটার চুরি করে টাকার বিনিময়ে তা ফেরত দিচ্ছে একটি চক্র।
এলাকার বিভিন্ন বিদ্যুৎ-চালিত গভীর নলকূপের মালিক ও একাধিক চাতাল ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলামের ইটাখোলা বাজারের চালকল থেকে কিছুদিন আগে মিটার চুরি হয়। পরে তাঁর মুঠোফোনে বার্তা পাঠিয়ে টাকা দাবি করে। তিনি ওই টাকা না দেওয়ায় এখন পর্যন্ত মিটারটি উদ্ধার করতে পারেননি।
কালাই উপজেলার পশ্চিম কুজাইল গ্রামের সেচমালিক কামরুল ইসলাম বলেন, সাত মাস আগে চাঁদাবাজেরা তাঁদের গভীর নলকূপের বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করে। পরে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে তা ফেরত পেয়েছেন। এ ব্যাপারে কালাই থানায় গত জুন মাসে তিনি একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর গত শনিবার রাতে ওই চক্র আবারও তাঁদের মিটার খুলে পুকুরে ফেলে দিয়ে যায়।
জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী ব্যবস্থাপক (এজিএম-প্রশাসন) সেকেন্দার আলী বলেন, মিটার চুরির বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে থানায় মামলা করা হবে। পল্লী বিদ্যুতের একটি গভীর নলকূপ গ্রাহকদের ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় মিটার কিনতে হয়।
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম গত মঙ্গলবার বলেন, সেচযন্ত্র ও চালকলের বৈদ্যুতিক মিটার চুরির বিষয়টি দেখার জন্য পাঁচ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর, মর্তুজাপুর, বিশা গ্রামের সেচপাম্পের মালিকেরা বলেন, এক মাসের মধ্যে ৫০টির মতো মিটার চুরি হয়েছে। রাতের কোনো এক সময় মিটার চুরি যায়। মিটার চুরির সময় মুঠোফোনের নম্বর কাগজে লিখে ঘরে ফেলে রাখা হয়। মিটার নিতে চাইলে বিকাশের মাধ্যমে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা পাঠালে চোরেরা কোনো জায়গায় মিটার রেখে খবর দেয়।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কার্যালয়ের কয়েকজন লাইনম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রায় রাতেই ওই এলাকায় সেচপাম্পের মিটার চুরি হচ্ছে। পরে মিটার ফেরত পেলে আমরা লাগিয়ে দিই।’
বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি দুপচাঁচিয়ার জোনাল কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) লুৎফুল বারী বলেন, গত ইরি মৌসুম থেকে কয়েকটি ট্রান্সফরমারসহ এ পর্যন্ত ৭০টির মতো মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। সেচপাম্পের জন্য মিটার খরচ ২৪ হাজার টাকা আর মিটার সংযোগ খরচ ৪০০ টাকা।
জিয়ানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বলেন, প্রতিদিনই সেচপাম্পের মিটার চুরি হচ্ছে। পুলিশকে বলে কোনো লাভ হয় না।
দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, মিটার চুরির ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। কেউ পুলিশকে জানালে অবশ্যই মিটার চুরি রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।