ভুয়া সনদে শিক্ষকতা চার নিয়োগ অবৈধ

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা সদরের ভাঙ্গুড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজে ভুয়া নিবন্ধন সনদ দিয়ে শিক্ষকতা করার অভিযোগে চার শিক্ষকের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। সনদ যাচাই-বাছাই শেষে পরিদর্শক ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর এ ঘোষণা দেয়। তবে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ওই চার শিক্ষক হলেন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক আরিফুল ইসলাম, বাংলার প্রভাষক সুলতানা পারভীন, ভূগোল বিষয়ের প্রভাষক গিয়াস উদ্দিন ও কম্পিউটার বিষয়ের প্রভাষক মাসুদুল আলম। তাঁদের মধ্যে তিনজন এমপিওভুক্ত নন। কিন্তু কম্পিউটার বিষয়ের প্রভাষক ২০১৩ সালের পয়লা অক্টোবর থেকে এমপিওভুক্ত হয়ে সরকারি বেতন-ভাতা নিচ্ছিলেন। পরিদর্শন প্রতিবেদনে তাঁর বেতন-ভাতার ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
পরিদর্শক ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১২ সালের বিভিন্ন সময়ে কলেজটিতে এই চার শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে ভুয়া নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে চাকরির অভিযোগ উঠলে গত বছরের ৪ নভেম্বর পরিদর্শক ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক হেমায়েত উদ্দিন ও শ্যামা প্রসাদ সাহা কলেজটি পরিদর্শন করেন। পরে দলটি গত ৭ এপ্রিল বেসরকারি নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে চার শিক্ষকের নিবন্ধন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পত্র দেয়। নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই শেষে ২ জুলাই চার শিক্ষকের নিবন্ধন সনদ সঠিক নয় বলে জানায়। পরে প্রতিবেদনে এই বিষয়গুলো উল্লেখ করে ভুয়া নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করায় চার শিক্ষকের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ১১ নভেম্বর ডাকযোগে নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি পাঠান পরিদর্শক ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মফিজ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া। প্রতিবেদনটির অনুলিপি দেওয়া হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এবং ভাঙ্গুড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বরাবর।
এ বিষয়ে গতকাল মুঠোফোনে জানতে চাইলে ভাঙ্গুড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল জলিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সপ্তাহ কয়েক দিন আগে প্রতিবেদনটি পেয়েছি। নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই চার শিক্ষকের নিয়োগ হয়েছিল। তখন ভুয়া নিবন্ধন সনদের বিষয়টি বোঝা যায়নি। বিষয়টি সুরাহার জন্য আগামী শনিবার আমরা কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভা আহ্বান করেছি। সভায় সবার সম্মতিক্রমে ওই চার শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে।’
এ প্রসঙ্গে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাহফুজুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের সনদ ভুয়া হলে সমর্থন দেওয়া হবে না। অবশ্যই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।