খালের মুখ বন্ধ করে দিলেন প্রভাবশালীরা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সনমান্দী ইউনিয়নের একটি খালের মুখ মাটি দিয়ে ভরাট করে কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে উপজেলার পাঁচ গ্রামের কয়েক শ কৃষকের এক হাজার ২০০ বিঘা জমিতে ফসল বপন করা যাচ্ছে না।
কৃষকেরা জানান, ওই খাল দিয়ে সনমান্দী ইউনিয়নের খৈতারগাঁও, চরভুলুয়া, পরমহেশ্বরদী, বারদী ইউনিয়নের আলমদী ও আটবাড়ী গ্রামের কৃষকদের বড় খাতের ভুলুয়া, চরভুলুয়া ও ছোট খাতের ভুলুয়া মৌজার প্রায় এক হাজার ২০০ বিঘা রবিশস্যের জমির বর্ষার পানি নিষ্কাশন হয়। গত বর্ষা মৌসুমে খৈতারগাঁও গ্রামের প্রভাবশালী হারুন মিয়া, মো. শাহীন, জামান মিয়া ও পিয়ার আলী ওই খালের মুখ মাটি দিয়ে ভরাট করে ঘর নির্মাণ করে পানি নিষ্কাশন হওয়া একেবারে বন্ধ করে দেন। এতে এ বছরের বর্ষার পানি খালের মাধ্যমে নিষ্কাশন হতে না পেরে জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে এ বছর কৃষকেরা চলতি রবিশস্য উৎপাদন করতে পারছেন না।
খৈতারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা কৃষক সিদ্দিকুর রহমান, গোলজার হোসেন ও আবদুল হক জানান, খালের মুখ বন্ধ করে দেওয়ায় পাঁচ গ্রামের কয়েক শ কৃষকের জমির পানি না সরার কারণে তাঁরা চলতি রবিশস্য উৎপাদন করতে পারছেন না। কৃষকদের দুর্ভোগের বিষয়টি স্থানীয় সনমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকেরা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া জমির পাশে বসে কান্নাকাটি করছেন। এ সময় কৃষক নাসির উদ্দিন ও আব্বাস আলী জানান, রবিশস্য চাষ করতে না পেরে তাঁদের দুঃখের শেষ নেই। এসব জমিতে তাঁরা শাকসবজি ও রবিশস্য চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখনো জমিগুলোতে হাঁটু ও কোমরপানি জমে আছে।
খালের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে দখলদার মো. শাহীন ও জামান মিয়া বলেন, ‘খালের মুখের জায়গা আমাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। তাই ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণ করেছি।’
সনমান্দীর ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘কৃষকেরা তাঁদের দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে আমার কাছে আবেদন জমা দিয়েছেন। আমি বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুরাদুল হাসান বলেন, ‘আমি বিষয়টির খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’