সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা মুক্তিযোদ্ধাদের

বিজয় দিবসে নওগাঁর বদলগাছি উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা। আজ মঙ্গলবার ব্যাংক থেকে সম্মানী ভাতার টাকা ওঠাতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানালেন মুক্তিযোদ্ধারা।

১০ থেকে ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা বলেন, বিজয় দিবসের আগে সম্মানী ভাতা দেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) আট দিন আগে অনুরোধ করেছিলেন তাঁরা। সম্মানী ভাতার টাকা নেওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় দিবসের আগের দিন সোনালী ব্যাংকের বদলগাছি শাখায় যেতে বলা হয়েছিল। উপজেলার ৪৪১ জন সম্মানী ভাতার সুবিধাভোগী মুক্তিযোদ্ধা আজ সকালে সোনালী ব্যাংকে যান। দীর্ঘক্ষণ ব্যাংকে অপেক্ষার পর ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক তাঁদের জানান, মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতার টাকা ব্যাংকে জমা হয়নি। এ কারণেই আজকে সম্মানী ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না।

মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘বিজয় দিবসের আগের দিন মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতার টাকা দেওয়া হবে, সেটি আট দিন আগে জানানো হয়েছিল। অথচ ব্যাংকে টাকা ওঠাতে গিয়ে জানতে পারি, ব্যাংকে টাকা নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আমরা আজ দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে জরুরি বৈঠকে বসেছিলাম। বৈঠকে বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

বদলগাছি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডারের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি কমান্ডার দিনেজ সিং আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। কালকের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমরা কেউ যাব না।’

সোনালী ব্যাংক বদলগাছি শাখার ব্যবস্থাপক ফজলে রাব্বী প্রথম আলোকে বলেন, ইউএনও গত রোববার মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতার চেক ব্যাংকে জমা দিয়েছিলেন। সেই চেকটি অগ্রণী ব্যাংক নওগাঁ বাসস্ট্যান্ড শাখায় মূল হিসাব নম্বরে পাঠানো হয়েছিল টাকা সংগ্রহের জন্য। মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতার মূল হিসাব নম্বর ওই শাখায়। সেখানে টাকা না থাকায় চেকটির টাকা সংগ্রহ করা যায়নি। এ কারণে আজ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতার টাকা দেওয়া যায়নি। এতে সোনালী ব্যাংকের কোনো গাফিলতি ছিল না।

বদলগাছির উপজেলা ইউএনও হুসাইন শওকত প্রথম আলোকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতার বরাদ্দ ব্যাংকে পৌঁছায়নি। এ কারণে তাঁরা সম্মানী ভাতা পাননি। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিজয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদান করেন, সে চেষ্টা চলছে।