২০ কিলোমিটার বেহাল সড়ক

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দবাড়ি সড়কের ভেঙে যাওয়া অংশ। গত বুধবার দুপুরে সবুজপুর এলাকা থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দবাড়ি সড়কের ভেঙে যাওয়া অংশ। গত বুধবার দুপুরে সবুজপুর এলাকা থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো

খানাখন্দ ও জিঞ্জিরা নদীর ভাঙনে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দবাড়ি সড়কের ২০ কিলোমিটার বেহাল হয়ে পড়েছে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সবুজপুর থেকে সানন্দবাড়ি বাজার পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির স্থানে স্থানে খানাখন্দে ভরে গেছে। উপজেলার সবুজপুর, স্লুইসগেট এলাকা, মকিরচর, বটতলা, ঝালুচর, কাঠারবিল, তারাটিয়া বাজার, বাবলা মোড়, বাহদুরাবাদ, মিতালি ও সানন্দবাড়ি বাজার এলাকাসহ বেশির ভাগ অংশে ছোট-বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া কিছু দূর পর পর সড়কের দুই পাশের অংশ ভেঙে গেছে। সবুজপুর এলাকায় জিঞ্জিরা নদীর ভাঙনে ফলে প্রায় ৩০০ মিটার সড়কের তিন ভাগ নদীগর্ভে চলে গেছে। এসব জায়গা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে বাস, ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও ভটভটি চলাচল করছে। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জামালপুরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কার্যালয় (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১১ কিলোমিটার মেরামত ও সবুজপুর এলাকায় জিঞ্জিরা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষায় ৫০০ মিটার সিসি ব্লক দিয়ে সড়ক প্রতিরক্ষামূলক কাজ করা হয়েছিল। মেসার্স দুর্গা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ করেছিল। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার এক বছর পরই গত বছর সবুজপুর এলাকার প্রায় ৩০০ মিটার সড়কের অনেকটা অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে। এক বছর পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে দায়বদ্ধ ছিল। দায়বদ্ধতা শেষ হওয়ার পরই নাকি নদীবেষ্টিত ওই অংশটি ভেঙে যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
সবুজপুর এলাকার হামিদুর রহমান নামের একজন অটোরিকশাচালক বলেন, সবুজপুর এলাকায় ভেঙে সড়কটি এত সরু হয়ে গেছে কোনো যানবাহন সেখানে ঢুকলে অন্য পাশের যানবাহনকে অপেক্ষা করতে হয়। নদীতে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি তো আছেই, সময়ও লাগে অনেক। অথচ সড়কটি ভালো থাকলে সানন্দবাড়ি থেকে দেওয়ানগঞ্জ বাজার পর্যন্ত যেতে সময় লাগত মাত্র ৪০ মিনিট। এখন সময় লাগে অন্তত দুই ঘণ্টা।
মিতালি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বুরহান উদ্দিনের বাড়ি সানন্দবাড়ি বাজার এলাকায়। তিনি বলেন, দেওয়ানগঞ্জ বাজার বা জামালপুর শহরে যাতায়াত করতে এখন ভয় লাগে। পুরো সড়কের অবস্থা ভয়ানক। মেরামতের কয়েক মাস যেতেই পিচ ও ইটের খোয়া উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
জানতে চাইলে জামালপুরের জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রকৌশলী মো. সায়েদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, সবুজপুর এলাকায় প্রায় ২০০ মিটার সড়ক নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। ভেঙে যাওয়া অংশের পূর্ব পাশ দিয়ে নতুন সড়ক নির্মাণের জন্য একটি পরিকল্পনা স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসেই তাঁরা ওই ভাঙন এলাকাটি পরিদর্শন করবেন। এরপর ওই ভাঙা অংশের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। তিনি আরও বলেন, খানাখন্দ ভরাটের জন্য প্রায় এক কোটি টাকার একটি দরপত্র মূল্যায়নের কাজ চলছে। আশা করা যায়, তিন মাসের মধ্যে এ সড়কটির মেরামত কাজ শুরু হবে।