আ.লীগের বিরুদ্ধে আ.লীগ বিদ্রোহীদের বহিষ্কার দাবি

পাবনার সুজানগর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী অবস্থান নিয়েছেন। দল মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওহাব গতকাল সোমবার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের ‘বিদ্রোহী’ উল্লেখ করে অবিলম্বে তাঁদের বহিষ্কারের দাবি করেন। অন্যথায় সব নেতা-কর্মী পদত্যাগ করবেন বলে হুমকি দেন।
লিখিত বক্তব্যে আবদুল ওহাব বলেন, ‘দলীয় প্রধান আমাকে পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি সেই অনুযায়ী নির্বাচন করতে মাঠে নেমেছি। কিন্তু নির্বাচন-প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা আহ্বান করতে অনুরোধ করা হলেও তিনি তা করেননি। বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদককে অবগত করা হলে তাঁরাও সভা আহ্বানের অনুরোধ করেন। কিন্তু সভাপতি তা না মেনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।’
আবদুল ওহাব অভিযোগ করেন, আবুল কাশেম শুধু একাই নন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আরও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন তাঁর ছেলে ও সুজানগর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামানসহ তাঁদের অনুসারী নেতা-কর্মীরা। যাঁদের মধ্যে পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের ১৮ জন সভাপতি ও সম্পাদকের ১৩ জন রয়েছেন।
সভাপতি ও তাঁর ছেলে কার পক্ষে কাজ করছেন—জানতে চাইলে আবদুল ওহাব বলেন, ‘সুজানগর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ থেকে পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে বর্তমান মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন ছিলেন। পৌরবাসীর চাহিদা অনুযায়ী দলীয় প্রধান আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। কিন্তু দলীয় প্রধানের নির্দেশ না মেনে তোফাজ্জল হোসেন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন। সভাপতি, তাঁর ছেলে ও তাঁদের অনুসারীরা তোফাজ্জলের পক্ষেই কাজ করছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি ও তাঁর ছেলে আওয়ামী লীগবিরোধী উল্লেখ করে অবিলম্বে তাঁদের দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়। এই দাবি না মানা হলে উপজেলার সব নেতা-কর্মী একযোগে দল থেকে পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সাতবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবুল হোসেন, সহসভাপতি আনোয়ার হাজারী, সাগরকান্দি ইউপির চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহীন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের মুঠোফোনে গতকাল দুপুরে ফোন করা হলে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন ফোনটি ধরে সভাপতি নেই বলে জানান।
এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাবনা-৫ আসনের সাংসদ গোলাম ফারুক বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো অবস্থাতেই দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করা যাবে না। আমরা তাঁদের বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগকে জানাব। যা সিদ্ধান্ত কেন্দ্রই নেবে।’