নীরব ভোটার, আশাবাদী প্রার্থী

পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর পৌরসভা নির্বাচনে গণসংযোগ, উঠান বৈঠকসহ বিভিন্নভাবে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটাররাও দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিশ্রুতির বার্তা। তিনটি পৌরসভাতেই নীরব ভোট বিপ্লব হতে পারে।
চাটমোহরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মির্জা রেজাউল করিম। বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহিম। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল মান্নান। আরও আছেন উপজেলা জাসদের সভাপতি শেখ আবুল বাশার।
পৌর এলাকার ভোটার ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করায় সাখাওয়াত হোসেন ভালো অবস্থানে আছেন। তবে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে বেশ কিছু নেতা-কর্মী কাজ করায় তিনিও খারাপ অবস্থানে নেই। প্রচারণা শুরুর প্রথম দিকে দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দলাদলি বাদ দিয়ে এখন দুই প্রার্থী ভোট প্রার্থনায় মন দিয়েছেন। একই অবস্থা তৈরি হয়েছে বিএনপিতে। দুজন প্রার্থী থাকায় সুবিধা করতে পারছেন না কেউ। চুপ রয়েছেন ভোটাররাও, প্রকাশ্যে কারও পক্ষেই মুখ খুলছেন না তাঁরা।
ভাঙ্গুড়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাবনা-৩ আসনের সাংসদ মকবুল হোসেনের ছেলে গোলাম হাসনাইন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদ খান। বিএনপি থেকে নির্বাচন করছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আইনজীবী মজিবর রহমান। পৌরসভাটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন আবদুল মালেক ও মহবুবুল আলম নামের আরও দুজন।
এই পৌরসভার ভোটাররা জানান, সাংসদের ছেলে হলেও নিজস্ব আমেজ রয়েছে গোলাম হাসনাইনের। তবে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীই তাঁর পথের কাঁটা। ফলে পৌরসভাটিতে লড়াই হচ্ছে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে। অন্যদিকে চুপচাপ এগোনোর চেষ্টা করছেন বিএনপির প্রার্থী। অন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন একই গতিতে। তবে ভাগ্য কার খুলবে, তা নির্ভর করছে ভোটারদের ওপর।
ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের বাসিন্দা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজু আহম্মেদ বলেন, ছোট্ট এই পৌরসভায় অল্প ভোট। তবে ভোটাররা বেশ সচেতন। নীরব ভোটের মাধ্যমেই তাঁরা পছন্দের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনবেন। পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মমিন উদ্দিন বলেন, ‘সমর্থন সব সময় ক্ষমতার পক্ষেই থাকে। তবে নীরব ভোট বিপ্লব অনেক কিছু পাল্টে দেয়। এখন অপেক্ষা ৩০ ডিসেম্বরের।’
ফরিদপুর পৌরসভায় নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও বর্তমান মেয়র খ ম কামরুজ্জামান মাজেদ। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আলাল। বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ফরিদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বর্তমান পৌর বিএনপির উপদেষ্টা এনামুল হক। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আরও লড়ছেন জাহাঙ্গীর আলম ও নূরুল ইসলাম।
এই পৌরসভার ভোটাররা বলেন, এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে। সমানে সমানে এগোচ্ছেন দুই দলের দুই প্রার্থী। স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও নীরব প্রচারণায় ব্যস্ত। এখন শুধু অপেক্ষার পালা।
পৌর এলাকার বাসিন্দা ও কলেজশিক্ষক মনসুর আহম্মেদ বলেন, ভোটারদের মন জয় করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা। তবে যিনিই জিতুন, ভোটের ব্যবধান খুব কম হবে।