এক বছরে আরও 'কোণঠাসা' বিএনপি

ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি গত এক বছরে আরও ‘কোণঠাসা’ হয়ে পড়েছে। পুলিশি বাধা, গ্রেপ্তার আতঙ্ক, হতাশা এবং সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দলটির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন।

দক্ষিণ জেলা বিএনপির মধ্যে ময়মনসিংহ সদর, ত্রিশাল, ভালুকা, গফরগাঁও, মুক্তাগাছা ও ফুলবাড়িয়া উপজেলা রয়েছে। এই কমিটির সভাপতি এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ।

দক্ষিণ জেলা বিএনপি গত মঙ্গলবার ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ দলীয় কার্যালয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে বাধ্য হয়। ওই দিন বিকেলে হরি কিশোর রায় সড়কে দক্ষিণ জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে হাতে গোনা কিছু নেতা-কর্মীকে দেখা যায়। তাঁদের ঘিরে রাখেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ অবস্থায় কিছুক্ষণ পর মাইকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসের’ কর্মসূচি শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইক বন্ধ করে কার্যালয়ের ভেতরে কর্মসূচি পালন করতে বলা হয়। নেতারা ভেতরেই আলোচনা অনুষ্ঠান করেন।

ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত কয়েকজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পুলিশের বাধার কারণে এক বছরে দক্ষিণ জেলা বিএনপির কর্মসূচি ১০০ মিটার পিছিয়ে গেছে। গত বছরও দলের কর্মসূচি কার্যালয় থেকে ১০০ মিটার দূরে নতুন বাজার মোড় পর্যন্ত যেতে দিত পুলিশ। এরপর বাধা দিত। ওই দিন কর্মসূচি দলীয় কার্যালয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হয়েছে।

বিএনপির স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বছরের আন্দোলনে অংশ নেওয়া দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মী মামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ কারণে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। দলের কর্মসূচিতে চোখে পড়ার মতো নেতা-কর্মীরা আসছেন না। দলের সভাপতি এ কে এম মোশাররফ হোসেন ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রথম বছর একটানা ময়মনসিংহ শহরে বাস করেন। প্রায় নয় মাস ধরে তিনি ময়মনসিংহে খুব কম আসেন। তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি বেশির ভাগ সময় বন্ধ পাওয়া যায়। সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দও সম্প্রতি মামলার ভয়ে অনেকটা অন্তরালে। তাঁর মুঠোফোনে ফোন করেও এখন পাওয়া যায় না।

বুধবার ও গতকাল শুক্রবার এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও আবু ওয়াহাব আকন্দের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

ময়মনসিংহ শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ আমজাদ আলী বলেন, দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা নেই। তবে মামলার ভয়ে নেতা-কর্মীরা হতাশ। গ্রেপ্তার হওয়ার আতঙ্কে আছেন প্রতিটি ওয়ার্ডের নেতারা। এ কারণে কর্মসূচি ডাকা হলেও তাঁরা আসতে চান না।