১৬ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার

বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৬ শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া, অনুমতি না নিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে যোগ দেওয়ায় এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গতকাল রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা গত বছর ও এর আগের বছর এসব অপরাধে জড়িত ছিলেন। অপরাধগুলো হচ্ছে: অন্যের হয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া, নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে জড়িত থাকা, এক ব্যক্তিকে আটকে রেখে চাঁদা আদায়, নারীকে লাঞ্ছনা ও হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষ ভাঙচুর।
একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা উপকমিটি সিন্ডিকেটে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল।
সিন্ডিকেট সদস্যরা জানান, বহিষ্কৃতদের মধ্যে সাতজন শিক্ষার্থী নিষিদ্ধঘোষিত হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের বিভিন্ন কক্ষে হিযবুত তাহ্রীরের প্রচারপত্র বিতরণের সময় সিসি ক্যামেরায় তাঁদের চিহ্নিত করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অন্যের হয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রশাসনের হাতে ধরা পড়েন ছয় ছাত্র। তাঁদের অনেকেই জেলহাজতে ছিলেন। সবাই প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
গভীর রাতে টিএসসিতে এক নারীকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় একজন ও লাঞ্ছনাকারী শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে গিয়ে অমর একুশে হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনায় আটক সাদ্দাম হোসেন নামে এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
এ ছাড়া, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক ব্যক্তি ও তাঁর বান্ধবীকে আটকে রেখে চাঁদা নেওয়ার ঘটনায় একজনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
সিন্ডিকেট সদস্যরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজে জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫(২) ধারা অনুযায়ী তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মান ল্যাঙ্গুয়েজ বিভাগের এক শিক্ষক না জানিয়ে একটি এম্বাসিতে চাকরিতে যোগ দেওয়ায় তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ছাড়া, সিন্ডিকেট সভায় ছাত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে ফার্সি বিভাগের এক শিক্ষকের দুই বছরের ইনক্রিমেন্ট কেটে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আগামী এক বছর তাঁর কোনো ধরনের ইনক্রিমেন্ট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।