ভাঙ্গুড়া পৌর কার্যালয়ে ছয় দিন ধরে তালা

পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরসভায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চার মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা ছয় দিন ধরে পৌর কার্যালয়ে তালা দিয়ে রেখেছেন। এতে পৌরসভার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে পৌর মেয়রের দাবি, বেতন নয়। আসলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে এ পৌরসভায় একজন উচ্চমান সহকারী পাঠানোয় নিজেদের সুবিধা ক্ষুন্ন হওয়ার শঙ্কায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এসব পুরোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী।
ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পৌরসভাটিতে পাঁচজন কর্মকর্তা ও মাস্টাররোলের ৫০ জন কর্মচারী রয়েছেন। পৌর তহবিলে অর্থ না থাকার অজুহাতে গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে তাঁদের বেতন-ভাতা দেওয়া হচ্ছে না। এতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তাঁরা। পৌর মেয়রকে বারবার বেতন-ভাতা দিতে বলা হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। ফলে ২১ জানুয়ারি থেকে পৌর কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
ভাঙ্গুড়া পৌরসভা কর্মকর্তা-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও পৌরসভার কর কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, চার মাস বেতন না পেয়ে তাঁদের অনেকের ঘরে খাবারের টাকাও নেই। কর্মচারীদের অনেকের খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। কিন্তু পৌর মেয়র বেতন-ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন। বেতন পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত তালা ঝুলবে বলে জানান তিনি।
সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার কর নির্ধারক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। বেতন না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
এ প্রসঙ্গে পৌরসভার হিসাবরক্ষক নাজমুল হাসান বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ প্রতি মাসে ছয় লক্ষাধিক টাকার দরকার। কিন্তু বর্তমানে পৌরসভার নিজস্ব তহবিলে কোনো অর্থ নেই। ফলে বেতন বন্ধ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর এলাকার সাত বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছয় দিন ধরে পৌর কার্যালয় তালাবদ্ধ থাকায় পৌরসভার পক্ষ থেকে কোনো সেবাই পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকেই বিভিন্ন কাজে পৌরসভায় গিয়ে ফিরে আসছেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কাজ না করায় পৌর এলাকায় ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে আছে।
এ প্রসঙ্গে পৌর মেয়র প্রকৌশলী আবদুর রহমান প্রধান বলেন, সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ভাঙ্গুড়া পৌরসভার জন্য একজন উচ্চমান সহকারী পাঠিয়েছে। কিন্তু এখানকার কর্মকর্তারা নিজেদের সুবিধা ক্ষুন্ন হওয়ার শঙ্কায় তাঁকে মেনে নিতে চাইছেন না। সেই ক্ষুব্ধতারই বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন তাঁরা। তবে বকেয়া বেতন-ভাতার বিষয়ে আবদুর রহমান বলেন, পৌরসভার জন্য একটি পশুর হাটের কিছু জায়গা কিনতে প্রায় ২২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এ কারণে পৌরসভার রাজস্ব খাতে বর্তমানে কোনো টাকা নেই। তাই বেতন বকেয়া পড়েছে। আগামী সপ্তাহে পশুর হাটটি ইজারা দেওয়া হবে। তখন আর সমস্যা থাকবে না।