এশিয়ান কার্ডিয়াক জেনারেল হাসপাতালে আবারও শিশুর মৃত্যু

নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) এক রাতে তিন শিশুর মৃত্যুর পর গত অক্টোবর মাসে রাজধানীর লালমাটিয়ার এশিয়ান কার্ডিয়াক অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। চার মাস যেতে না-যেতেই গত সোমবার রাতে হাসপাতালের আইসিইউতে আবারও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ জানায়, গত সোমবার জামালপুর থেকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত আড়াই বছরের শিশুপুত্রকে নিয়ে ওই হাসপাতালে আসেন সদর আলী নামে এক ব্যক্তি। এরপর সোমবার রাত আটটার দিকেই হাসপাতালের আইসিইউতে শিশুটির মৃত্যু হয়। প্রথমে শিশুটির অভিভাবকেরা অবহেলা বা ভুল চিকিৎসায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দলও যায়। কিন্তু এর মাঝেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের সমঝোতা হয়ে যায়। শিশুটির বাবা মোহাম্মদপুর থানায় লিখিত দিয়েছেন যে তাঁদের কোনো অভিযোগ নেই। তাঁরা মনে করেন, স্বাভাবিকভাবেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার হাফিজ আল ফারুক বলেন, একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করে ফেলেছে। থানায় কোনো মামলা হয়নি।
গতকাল বিকেলে ওই হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিয়মিত কার্যক্রম চলছে। তবে শিশুর মৃত্যুর বিষয়ে কেউ কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। হাসপাতালের মালিক বা অন্য কারও ফোন নম্বর চাইলে পরে আসতে বলা হয়।
বন্ধ করে দেওয়ার পরেও হাসপাতালটি কীভাবে চালু হলো, জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক শামিউল ইসলাম সাদী প্রথম আলোকে বলেন, গত অক্টোবরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ওই হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়ার পরে হাসপাতালের মালিকপক্ষ সরকারের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন। এরপরে আদালত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। ওই স্থগিতাদেশের বলেই হাসপাতালটি চলছিল। আদালতের আদেশ ছিল, ওই হাসপাতালের কী কী অনিয়ম রয়েছে, সে বিষয়ে ৭ জানুয়ারির মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিবেদন দিয়েছে।
অক্টোবর মাসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, এই হাসপাতালটি ২০১৩-১৪ সালের পর লাইসেন্স নবায়ন করেনি। প্রতিষ্ঠানটির নবজাতকের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (এনআইসিইউ) অনুমোদনও ছিল না। এসব কারণেই হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
হাসপাতালের একজন কর্মী গতকাল জানান, বন্ধ করে দেওয়ার দুই মাস পর গত ডিসেম্বরে হাসপাতালটি আবারও চালু হয়। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, আদালত তাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন।