বস্তায় বসে স্কুলের পাঠ

বিদ্যালয়টির দুটি ভবনের একটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে দুই বছর আগে। দোতলা আরেকটি ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে শিক্ষকেরা বসেন। পাঠদানের জন্য একতলার আরেকটি কক্ষ ও দোতলার তিনটি কক্ষই ভরসা। কিন্তু মাত্র এই চারটি কক্ষে ৮৩০ জন শিক্ষার্থীর বসার জায়গা হয় না। তাই পাঠদান চলছে খোলা মাঠে।
বাড়ি থেকে স্কুলব্যাগে করে বইয়ের সঙ্গে প্লাস্টিকের সাদা বস্তাও নিয়ে আসে শিক্ষার্থীরা। এরপর বিদ্যালয় মাঠে ওই বস্তা পেতেই বসে যায় তারা। প্রতিদিন এভাবেই খোলা আকাশের নিচে জ্ঞান আহরণ করতে হচ্ছে তাদের। বৃষ্টি এলেই বইখাতা নিয়ে দে ছুট।
এ দৃশ্য কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলি ইউনিয়নের মাঝিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৪২ সালে মাঝিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে চার কক্ষের একটি ভবন তৈরি করা হয়। কালের প্রভাবে একসময় ওই ভবনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়তে থাকে। পলেস্তারা খসে খসে পড়ে। এই অবস্থায় ২০১৪ সালের জুন মাসে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী সময়ে নির্মিত একতলা ভবনটি তখন দোতলায় উন্নীত করা হয়। সেখানে তিনটি শ্রেণিকক্ষ তৈরি করা হয়। প্রতিটি কক্ষে ৪০ জন করে শিক্ষার্থীর বসার জায়গা রয়েছে। কিন্তু ঠাসাঠাসি করে ৬০ জন পর্যন্ত বসে।
৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা মাঠে বিছানোর জন্য ব্যাগ খুলে বস্তা বের করছে। পঞ্চম শ্রেণির অন্তত ছয়জন শিক্ষার্থী বলে, উপুড় হয়ে শুয়ে লিখতে খুব অসুবিধা হয়। আর শীতের সময় মাঠে রোদের মধ্যে বসে পড়তে ভালো লাগলেও গরমের সময় কষ্ট হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল বাসার বলেন, বৃষ্টি এলে শিক্ষার্থীদের কেউ নতুন ভবনের বারান্দায় ও সিঁড়িতে অবস্থান নেয়। আবার কেউ বাড়িতে চলে যায়। দ্রুত ভবন নির্মিত না হলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ওই বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।