এসআই রতনের বিরুদ্ধে ছাত্রী শ্লীলতাহানির সত্যতা মিলেছে

রাজধানীর আদাবর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রতন কুমার হালদারের বিরুদ্ধে বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি। আজ বুধবার ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমান ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। 

গত ৩১ জানুয়ারি মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদের কাছে এসআই রতন কুমার হালদার বেসরকারি আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরদিন রতন কুমারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ঘটনা তদন্তে ঢাকা মহানগর পুলিশ এবং পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
বিচার বিভাগীয় ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপপরিদর্শক রতন কুমার হালদার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই তদন্তে পাঁচজন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনকে নিরপেক্ষ হিসেবে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ দুজনই বিচারকের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন, গত ৩১ জানুয়ারি ওই ছাত্রী আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শেষ করে ফিরছিলেন। মোহাম্মদপুরের জাপান-গার্ডেন সিটির কাছে আসলে এসআই রতনসহ পুলিশের তিন সদস্য রিকশার গতিরোধ করে ওই ছাত্রীকে একটি দোকানে ঢোকান। এর পর এসআই রতন ওই শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করেন।
৩১ জানুয়ারির ঘটনার পরদিন ওই ছাত্রী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ঢাকা-৪ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নালিশি মামলা করেন। আদালত মামলা আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। ঢাকার মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক তদন্ত শেষে এই প্রতিবেদন মুখ্য মহানগর হাকিমের কাছে প্রতিবেদন দেন। মুখ্য মহানগর হাকিম আজ এই প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে জমা দেন।

ভুক্তভোগী আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তিনি ঘটনার দিন রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার দিন বেলা তিনটার দিকে রিকশায় করে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোহাম্মদপুরের দিকে যাওয়ার সময় শিয়া মসজিদ সিগন্যালের কাছে একটি মোটরসাইকেলে পুলিশের তিন সদস্য তাঁর পথ রোধ করেন। রিকশাভাড়া না দিয়েই তাঁকে নামতে বাধ্য করেন। এরপর তাঁকে একটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকানে নিয়ে যান। ওই দলটির নেতৃত্বে ছিলেন এসআই রতন কুমার। তিনি ওই ছাত্রীকে ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেন। ভ্যানিটি ব্যাগ ও জ্যাকেট খুলে কথিত ইয়াবা খোঁজা শুরু করেন রতন। ওই দোকানের কর্মীদেরও বের করে দেওয়া হয়।
ওই ছাত্রীর অভিযোগ, একপর্যায়ে এসআই রতন তাঁকে বিভিন্ন ধরনের বাজে কথা বলেন। ওই ছাত্রী পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের কাছে এর বিচার দেবেন বলেও ভয় দেখান। তখন এসআই রতন বলেন, কেউই তাঁর কিছু করতে পারবে না।

আরও পড়ুন..