বিরোধ নিরসনে বাইরের ভূমিকার প্রয়োজন নেই

বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিরোধ নিরসনে বাইরের কারও ভূমিকা রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। কেননা, বাংলাদেশের মধ্যেই চিন্তা-ভাবনা ও বুদ্ধির কোনো ঘাটতি নেই। বরং যারা বাংলাদেশের শুভাকাঙ্ক্ষী, তাদের উচিত রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনা ও সংলাপ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করা।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা গতকাল মঙ্গলবার এই অভিমত প্রকাশ করেছেন। এ সময় তিনি আরও বলেছেন, ‘বিরোধ নিরসনে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই সংলাপে বসতে হবে এবং আমি নিশ্চিত যে শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক নেতারা তা করবেন, যাতে কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন সম্পন্ন হয়।’
রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (অ্যামচেম) ইন বাংলাদেশের মাসিক মধ্যাহ্ন ভোজসভায় মজীনা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হওয়ার দুই বছর পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে গতকাল তিনি অ্যামচেমের সভায় আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাইয়ের বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে ড্যান মজীনা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তিনি খুব সুস্পষ্ট ও জোরালো বার্তা দিয়ে গেছেন। আর তা হলো, সহিংসতার কোনো সুযোগ নেই, সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়। তবে সব রাজনৈতিক দলকে তাদের মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে দিতে হবে। তাদের কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। তাদের পরস্পরের সঙ্গে সংলাপে বসতে হবে। আলোচনা করতে হবে।’
মজীনা তাঁর বক্তৃতায় গত দুই বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের সম্ভাবনার বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা এশিয়ার আগামী বাঘ হিসেবে দেখতে চাই, চাই মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া দেখতে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশে বন্দর-বিদ্যুৎ তথা অবকাঠামোর সমস্যা আছে, যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। দুর্নীতির প্রকোপ ও লাল ফিতার দৌরাত্ম্য আছে, যা কমিয়ে আনা সম্ভব। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সমস্যা আছে, তা বিশেষভাবে সমাধান করা সম্ভব।
স্বাগত ভাষণে অ্যামচেমের সভাপতি আফতাব-উল ইসলাম বলেন, বেসরকারি খাতের জন্য এখন সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো রাজনৈতিক সংঘাত। তাঁরা এখন আস্থা হারিয়ে ফেলছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, রাজনৈতিক নেতারা সংঘাত নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন। তা না হলে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।’