চাকমা বর্ণমালা শেখান তাঁরা

চুচ্যাঙা—কা, গুজঙ্যা—খা, পিজপুঝা—আ, বুগতপদলা—মা। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় কানে ভেসে আসে চাকমা ভাষার শব্দগুলো। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ‘রিবেং যুব সংঘ’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন চাকমা ভাষা শেখাচ্ছে। কেবল এই সংগঠনটি না, দীঘিনালায় ‘চাঙমা সাহিত্য বা’ নামের আরেকটি সংগঠনও এই উদ্যোগ নিয়েছে। দুটি সংগঠনই তরুণদের। আর এই ভাষা শিক্ষা চলে বিনা পয়সায়।
কেন এই উদ্যোগ? প্রশ্নের জবাবে রিবেং যুব সংঘের সভাপতি রিপন চাকমা বলেন, ‘সংখ্যার দিক থেকে কম বিশ্বের অনেক জাতির বর্ণমালাই হারিয়ে গেছে। আমরা চাকমা জাতি। নিজস্ব ভাষা থাকলেও অধিকাংশই আমাদের বর্ণমালার সঙ্গে পরিচিত নয়। তাই আমরা চাই, আমাদের জাতির সবাই চাকমা বর্ণমালার সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠুক। লিখতে পারুক এই ভাষায়, পড়তে পারুক।’
দুই সংগঠনের সব সদস্যই বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কেউ কেউ এলাকার বাইরে পড়াশোনা করেন। ছুটিতে বাড়িতে এলেই ভাষা শিক্ষায় লেগে পড়েন। সম্প্রতি দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের মিলনায়তনে চাকমা বর্ণমালা শেখাচ্ছেন রিবেং যুব সংঘের সদস্য এলিয়েন্স চাকমা। তিনি বলেন, ‘বর্ণমালার বিভিন্ন বই সংগ্রহ করে এবং একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুর কাছ থেকে বর্ণমালা শিখেছি। আমরা সপ্তাহের বৃহস্পতি ও শুক্রবার ৫০ জন শিক্ষার্থীকে বিনা মূল্যে বর্ণমালা শেখাই। নিজের ভাষার বর্ণমালা শেখাতে নিজেরও খুব আনন্দ লাগে।’
এলিয়েন্স চাকমা জানান, বর্ণমালার কয়েকটি বর্ণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এটির সুরাহা হওয়া প্রয়োজন।
ভাষা শিখতে এসেছে দীঘিনালা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জুনিয়েন চাকমা। বলল, ‘নিজের বর্ণমালা চিনি না। বর্ণমালায় লিখতে পারি না। এটা আমার জন্য লজ্জাজনক।’