পিটিয়ে নেতার পা ভেঙে দিলেন কর্মীরা

পাবনার চাটমোহর উপজেলার খলিশাগাড়ী বিলে জলমহালের মাছের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পাবনা-৩ আসনের সাংসদ মকবুল হোসেন। অপর পক্ষে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন।
অভিযোগ উঠেছে, গত মঙ্গলবার রাতে সাখাওয়াত হোসেনের কর্মী-সমর্থকেরা লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে সাংসদের সমর্থক ও নিমাইচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম কামরুজ্জামানের (৪৭) পা ভেঙে দিয়েছেন। তাঁকে গুরুতর আহতাবস্থায় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে কামরুজ্জামান মোটরসাইকেলে চড়ে স্থানীয় বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। উপজেলার হরিসভা সড়কের কৃষ্ণকুণ্ডুর মোড়ে কয়েকজন লোক তাঁর পথরোধ করে রড দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়। পরে আহতাবস্থায় স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে চাটমোহর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রাতেই তাঁকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক সবিজুর রহমান জানান, তাঁর বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ গুঁড়িয়ে গেছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান মুন্সি বলেন, আহত কামরুজ্জামানের বাবা আবদুল কাদের বাদী হয়ে বেলাল হোসেন, ফরিদুল ইসলাম, মিলন হোসেন, হাফিজুর রহমান, আসাদুল মণ্ডল ও জাহিদ হোসেনসহ ১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। ঘটনার পর জাহিদ হোসেন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
কামরুজ্জামান অভিযোগ করেন, মামলার আসামিরা সবাই তাঁদের দলের নেতা-কর্মী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির সমর্থক। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মীই আমার সমর্থক এটা ঠিক। কিন্তু এই মারধরের ঘটনায় আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। উপজেলার সব বিল, হাওর ও জলা সাংসদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাঁর লোকজনই এখানকার টাকা ভাগাভাগি করে।’ সাংসদ মকবুল হোসেন বলেন, ‘বিল-হাওর আমার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে—এটা ঠিক না। স্থানীয় মৎস্যজীবী ও এলাকাবাসীই এর নিয়ন্ত্রণ করে। সম্প্রতি তাদের মধ্যেই কোনো এক কারণে বিরোধ তৈরি হয়েছে। বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে আমি দলের স্থানীয় নেতাদের বলেছিলাম। কিন্তু তাঁরা আমার কথা না শোনায় এ ঘটনা ঘটল।’