সুতার বদলে আবারও আনা হলো সিগারেট

মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও চট্টগ্রাম বন্দর চত্বর থেকে কনটেইনারভর্তি সিগারেট জব্দ করা হয়েছে। সুতা আমদানির মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আনা এক কনটেইনার সিগারেট গতকাল বুধবার বন্দর চত্বরে জব্দ করেন কাস্টমস এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। জব্দ করা সিগারেটের মূল্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মুকিতুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, কনটেইনারটিতে ২৮৮টি কার্টনে দুটি ভিন্ন ব্র্যান্ডের মোট ২ লাখ ৮৮ হাজার প্যাকেট পাওয়া গেছে। প্রতিটি প্যাকেটে ২০টি করে সিগারেটের শলাকা রয়েছে।
কাস্টমসের নথি অনুযায়ী, ঢাকার সাভারের জেনেটিক ফ্যাশন লিমিটেডের নামে চালানটি এসেছে। পণ্যের রপ্তানিকারক সংযুক্ত আরব আমিরাতের ‘ট্রান্সভেগন জেনারেল ট্রেডিং এফজেডই’। এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি র্যা বের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বন্দর চত্বর থেকে গাজীপুরের একটি পোশাক প্রতিষ্ঠানের নামে আনা এক কনটেইনার সিগারেট জব্দ করে কাস্টমস। এতে ওই চালানটিও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে একই রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান থেকে এসেছিল।
কাস্টমস সূত্র জানায়, পোশাকশিল্পের কাঁচামাল হিসেবে শুল্কমুক্ত সুবিধায় খালাস নেওয়ার জন্য আমদানিকারকের পক্ষে কাস্টম হাউসে নথিপত্র জমা দেয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ‘ফোর স্টার ট্রেডিং কোম্পানি’। নথিতে উল্লেখ করা হয়, কনটেইনারটিতে সুতা রয়েছে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি চালানটির শুল্কায়ন হয়। কিন্তু খালাসের ছাড়পত্র নেওয়ার সময় শুল্কায়নের নথিতে রাজস্ব কর্মকর্তার সই জাল করা হয়েছে বলে সন্দেহ তৈরি হয়। এরপর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার কামরুল ইসলাম বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য গত ৯ ফেব্রুয়ারি চালানটির খালাস স্থগিত করেন।
তবে আমদানিকারকের পক্ষে পণ্য খালাসকারী সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ফোর স্টার ট্রেডিংয়ের কর্ণধার কামির হোসেন প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে কেউ পণ্য খালাস করার চেষ্টা করেছিল।
জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণত কোনো পণ্য চালানের খালাস স্থগিত করা হলে আমদানিকারক প্রয়োজনীয় নথিপত্র দিয়ে দ্রুত চালান খালাসের পদক্ষেপ নেন। কিন্তু এই চালানটির খালাস স্থগিত করার পর আমদানিকারকের পক্ষে কোনো তৎপরতা ছিল না। ফলে চালানকে ঘিরে সন্দেহ তৈরি হয়। পণ্য পরিবহনকারীর স্থানীয় প্রতিনিধি সাকী শিপিং লাইনস থেকে নথিপত্র যাচাইয়ের জন্য কাস্টমসে পাঠানো হয়। কিন্তু এতে গরমিল পাওয়া যায়।’
এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে কনটেইনারে সিগারেট এনেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। এটি নিঃসন্দেহে চোরাচালানের ঘটনা।