কার্যক্রম স্থবির কর্মীরা হতাশ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থবির থাকায় দলের কর্মী-সমর্থকেরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এ সুযোগে শক্তিশালী হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো।
উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের জামলাবাজ গ্রামের বাসিন্দা শ্রমজীবী দুলা মিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পক্ষেই উপজেলার সব মানুষ আছিন। কিন্তু নেতারা পাবলিক ও পুলাপানের লগে কথা কয় না। তাই অন্য দলগুলো এখন বড় হয়ে গেছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতারা ব্যক্তিগতভাবে অনেক শক্তিশালী, কিন্তু দল অনেক দুর্বল। কারণ দলের প্রয়োজনে এ নেতারা কেউ দল কিংবা কর্মীদের পাশে দাঁড়ান না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুজাহিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম না থাকায় দলটি ভোটের রাজনীতিতে উপজেলায় পিছিয়ে পড়ছে। একাত্তরের পরাজিত শক্তি এর সুবিধা পাবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলী মর্তুজা বলেন, ২০০৩ সালে কমিটি গঠনের পর থেকেই দলের কার্যক্রম নেই। গত পাঁচ বছরে সাংগঠনিকভাবে ১ নভেম্বর প্রথম মিছিল করেছে। কিন্তু তারপর ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবসে এবং ৪ নভেম্বর থেকে ১৮ দলের ডাকা ৬০ ঘণ্টার হরতালে কোনো কর্মসূচি ছিল না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সোবাহান আখঞ্জি বলেন, ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে অবৈধভাবে উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি ষোষণা করা হয়েছিল। আর এ কারণে দীর্ঘদিন সভা-সমাবেশ ও দলীয় কার্যক্রম ছিল না। তবে এখন আস্তে আস্তে সব দ্বন্দ্ব দূর হয়ে যাচ্ছে।
দলীয় সূত্র জানায়, ২০০৩ সালের ১ মার্চ উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সমেঞ্চলন হয়। ওই সম্মেলনে আবদুস ছোবাহান আখঞ্জিকে সভাপতি ও আবুল হোসেন খানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬৭ সদস্যের তাহিরপুর উপজেলা কমিটি করা হয়। এ কমিটি ঘোষণার এক মাসের মধ্যে একই স্থানে ৩১ মার্চ আরেকটি সম্মেলন করে দলের আরেক পক্ষ। এতে আম্বর আলীকে সভাপতি ও শফিকুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে পাল্টা কমিটি করা হয়। এ কমিটি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের আশীর্বাদপুষ্ট কমিটি হিসেবে পরিচিত ছিল। গত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দুই কমিটির বিভেদ দূর হয়। ওই সময় সবাই জেলা অনুমোদিত কমিটি মেনে নেন। এ কমিটির ১৩ জন মারা গেছেন, দুজন সরকারি চাকরিতে এবং একজন বিদেশে আছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত আর দলের সম্মেলন হয়নি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পরই উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।