ভোলায় চেয়ারম্যান পদে প্রকাশ্যে ভোট

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন

দ্বীপ জেলা ভোলায় আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ভোট গ্রহণ চলছে। জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রকাশ্যে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। তবে সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ভোটাররা নির্ধারিত স্থানে গিয়ে গোপনে ভোট দিচ্ছেন। এ ছাড়া কিছু কেন্দ্রে সংঘাত-সংঘর্ষ এবং কয়েকটি ইউনিয়নে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জন করেছেন।

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে চেয়ারম্যান পদে দলীয় লোকদের সামনেই ভোট দিতে দেখা যায়।
সকালে সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের দক্ষিণচর নোয়াবাদ সরদারবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়, বাইরে লোকজনের বেশ লম্বা লাইন। ভোট গ্রহণ চলছে স্কুলটির দোতলায়। দোতলার তিন নম্বর বুথে গিয়ে দেখা যায়, নৌকার ব্যাজ পরা এক তরুণ সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সামনেই ভোট তদারকি করছেন। যাঁরা ভোট দিতে আসছেন, তাঁদের চেয়ারম্যান পদে ওই তরুণের সামনেই ভোট দিতে হচ্ছে।
এর মধ্যে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়া জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভোট যেহেতু দিতেই হবে, সবার সামনেই দিলাম।’
এ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘কিছুই করার নেই। আপনিও এ দেশের মানুষ, আমিও।’
এরপর একই উপজেলার আলি নগর ইউনিয়নের আলি নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে একই চিত্র দেখা যায়। এই কেন্দ্রের ১ নম্বর বুথে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যান পদে ব্যালটে প্রকাশ্যেই সিল মারা হচ্ছে। আর সদস্যপদের ভোট নির্দিষ্ট গোপন স্থানে গিয়ে দিতে হচ্ছে।
এখানেও নৌকা প্রতীক ব্যাজধারীরা ভোট তদারকি করছে। এই কেন্দ্রে বিএনপির প্রার্থীদের কোনো তৎপরতা দৃশ্যমান ছিল না। এই কেন্দ্রে দেখা যায়, একজন যুবককে মারতে মারতে বের করে দিচ্ছে একদল তরুণ। ভোটকেন্দ্রের বাইরে এসে ওই যুবক প্রথম আলোকে বলেন, তিনি একজন সদস্য পদপ্রার্থীর এজেন্ট। তাঁর সামনেই ভোটে অনিয়ম করতে দেখে তিনি প্রতিবাদ করেন। এ কারণেই তাঁকে মেরে বের করে দেওয়া হয়।
এরপর দৌলতখান উপজেলার চেপাতা ইউনিয়নের নলগোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়, ভোটকেন্দ্রের একটি কক্ষের দুটি দরজাই বন্ধ। ভেতরে ৩০-৩৫ জন মানুষ। সবাই নির্বাচন কর্মকর্তাকে কেন্দ্র করেই ভিড় করে আছে। ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখা যায়, সেখানে সবার সামনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে ভোট দেওয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কেন্দ্রের একজন নির্বাচন কর্মকর্তা প্রথম আলোর প্রতিনিধিকে বলেন, এখানে বিএনপির কোনো মনোনীত প্রার্থী নেই। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর সমর্থকেরাই এসব করছে। সেটা তো আপনি নিজেই দেখলেন।
এই তিন ইউনিয়ন ঘুরে সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থীদের ভোট নিয়ে কিছুটা উত্তেজনা দেখা গেলেও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ভোট একচেটিয়াভাবে সবার সামনেই দেওয়া হচ্ছে।
ওই কেন্দ্রগুলোয় বিএনপির প্রার্থীদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের দুই সদস্যপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে ওই কেন্দ্রে বেশ কিছুক্ষণ ভোট গ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, এখন আবার ভোট নেওয়া চলছে।

আরও পড়ুন: