নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন

বাংলাদেশে ৫৩ শতাংশ মেয়ে স্কুল-কলেজে যাওয়া-আসার পথে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। এ কারণে অনেক মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করা সম্ভব।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ-বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার ও ইউএনএফপিএ এই গোলটেবিলের আয়োজন করে।
গোলটেবিল আলোচনার শুরুতে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এতে নারীর প্রতি শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের ভয়াবহতা তুলে ধরা হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র সাইমুর রহমান বলেন, বাল্যবিবাহ রোধ করতে মায়ের ভূমিকা রাখতে হবে। কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী নাইমা আকতার বলে, নিজের অধিকার সম্পর্কে নারীরা সচেতন নয়।
কক্সবাজার সরকারি কলেজের ছাত্রী আকলিমা হোসাইন বলে, রাস্তায় মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে বখাটেরা। এটি বন্ধ করতে হবে। কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী চৈতী দাশ বলে, সাইবার ক্রাইম বেড়ে যাওয়ায় মেয়েদের বেশি ভুগতে হচ্ছে।
কক্সবাজার নাগরিক সমাজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারে ৬০ শতাংশ নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হচ্ছে মাদকের কারণে।
কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. রেজাউল করিম বলেন, নারীর প্রতি পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টালে সহিংসতা কমবে।
জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে ধর্মীয় শিক্ষক ও মসজিদের ইমামদের প্রশিক্ষণ জরুরি। জুমার নামাজের খুতবাতে ইমামরা নারীর মর্যাদা আর সহিংসতা বন্ধ করা নিয়ে আলোচনা করলে ফল পাওয়া যাবে।
সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ খোরশেদ আরা হক বলেন, লেখাপড়া শিখেও মেয়েরা নিজের অধিকার সম্পর্কে ধারণা রাখে না।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফেরদৌস আলী চৌধুরী বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের পাশাপাশি পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন জরুরি।
অধ্যাপক সালেহ উদ্দিন আহমদের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) অনুপম সাহা, জেলা সিভিল সার্জন পু চ নু, কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মো. নুরুল ইসলাম, উন্নয়নকর্মী খালেদা বেগম, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বি এম ছিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।