কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগারের উদ্বোধন

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় নবনির্মিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার সকালে ১০টার দিকে নতুন কারাগারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

কারাগারের উদ্বোধন উপলক্ষে কারাগারের ভেতর ও বাইরে করা হয়েছে সাজসজ্জা। কারাগারের সামনের সড়ক নানান রঙের ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরানীগঞ্জ’।
পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে ১৭৮৮ সালে তৈরি হওয়া এই কারাগার শিগগির চলে যাবে ইতিহাসের পাতায়।
কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার স্থানান্তরের সময় বন্দী নারীদের গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে নেওয়া হবে। পরে তাঁদের কেরানীগঞ্জে নতুন কারা ভবনে আনা হবে।
অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুরে ১৯৪ একরের বেশি জমিতে তৈরি হয়েছে নতুন কারাগার। এর মধ্যে ৩০ একর জমিতে বন্দীদের জন্য ভবনের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এসব ভবনে চার হাজার পুরুষ ও আলাদা ভবনে ২০০ নারী বন্দীর ধারণক্ষমতা রয়েছে। তবে আট হাজারের মতো বন্দী থাকতে পারবেন। বর্তমান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দী ধারণক্ষমতা ২ হাজার ৮২৬ জন, আছেন ৭ হাজার ৩০০ জন। এই কারাগারে ১৬০ জন নারী বন্দী আছেন।
বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতু থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-মাওয়া সড়কের বাঁ পাশে রাজেন্দ্রপুরে নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অবস্থান। প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের চারদিকে সীমানাপ্রাচীর গড়ে তোলা হয়েছে। ভেতরে আটটি ছয়তলা ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। প্রতিটি ভবন অন্তত ছয় ফুট উচ্চতার পৃথক সীমানাদেয়ালে ঘেরা। সেগুলোতে শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। পাশে আরও দুই ও চারতলা ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। প্রতিটি ভবনের মেঝেতে ছয়টি করে বড় বড় কক্ষ রয়েছে।
সীমানাপ্রাচীরের বিভিন্ন স্থানে ৪০ ফুট উঁচু চারটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার রয়েছে। কারা কর্মকর্তারা বলছেন, ওই টাওয়ার থেকে পুরো কারাগারের চিত্র দেখা যাবে। কারাগারের প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, আটটি ছয়তলা ভবনের মাঝে বিশাল মাঠ। এই মাঠের মাঝে বন্দীদের জিজ্ঞাসাবাদের ছোট্ট একটি ঘর।
নির্মাণ সরদার ও কারাগারের নিরাপত্তাকর্মী বিশাল হোসেন বলেন, দুর্ধর্ষ জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের রাখার জন্য চারটি চারতলা কারা ভবন (ডেঞ্জার সেল) নির্মাণের কাজ চলছে। ডেঞ্জার সেলের তিন নম্বর ভবনের সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে টিনশেডের একতলা ফাঁসির মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। এর দক্ষিণে ওয়ার্কশপ, লন্ড্রি, সেলুন, গুদাম ও গম থেকে আটা তৈরির কারখানা তৈরি করা হয়েছে।