চীনের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর

চীনের পররাষ্ট্রবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী কং জুয়ানইউর হাতে উপহার হিসেবে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি তুলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা l ছবি: বাসস
চীনের পররাষ্ট্রবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী কং জুয়ানইউর হাতে উপহার হিসেবে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি তুলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা l ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা উত্তরোত্তর বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
চীনের সফররত পররাষ্ট্রবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী কং জুয়ানইউ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গতকাল বুধবার সকালে তেজগাঁও কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে শেখ হাসিনা এ প্রত্যাশা জানান। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার জন্য চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বাংলাদেশ সাদরে বরণ করার অপেক্ষায় আছে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে চীনা মন্ত্রীর ফলপ্রসূ আলোচনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে সরকার সারা দেশে বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। চীনা বিনিয়োগের জন্য সরকার এ ধরনের এলাকায় জায়গা বরাদ্দ রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক সম্পর্ক জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বিসিআইএম (বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মিয়ানমার) ইকোনমিক করিডোর সৃষ্টি হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।

চীনা মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার সব চুক্তি ও কার্যক্রম বাস্তবায়নে তাঁরা এ দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গেও তাঁর ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে তিনি বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে বাংলাদেশের ৭ শতাংশের ওপর জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন দারুণ একটি ব্যাপার। শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ সফলভাবে অর্জিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন কং জুয়ানইউ।

চীনের মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে চীন তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, পররাষ্ট্রসচিব শহিদুল হক ও চীনা রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াং।

নার্সিং পেশার উন্নয়নে কোর্স চালু করবে জাপান: জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশের নার্সিং সেবার মান উন্নয়নে জাপানের কোচি বিশ্ববিদ্যায়ের সহযোগিতার একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। কোচি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট হিরোকো মিনামি গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাতের সময় এ নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের জানান, এই প্রকল্পের আওতায় কোচি বিশ্ববিদ্যালয় নার্সিং শিক্ষায় ব্যবহারিক শাখার উন্নয়নের জন্য একটি গ্র্যাজুয়েশন কোর্সও চালু করবে। দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী দেশে নার্সিং খাতের উন্নয়নে তাঁর সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

সাক্ষাৎকালে অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে, জাইকার আবাসিক প্রতিনিধি মিকিও হেদাতে উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে অনুদান: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং অন্যান্য নির্বাচিত বীরত্বসূচক পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের স্বজনদের অনুদান দিয়েছেন। তিনি গতকাল তেজগাঁও কার্যালয়ে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন।