পুলিশের তাড়ায় যুবকের মৃত্যু, ফাঁড়িতে হামলা-ফাঁকা গুলি

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভা এলাকায় শনিবার রাতে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ জনতা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১৫টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। 

নিহত যুবক স্থানীয় হক বাজার এলাকার বেলকোটারী এলাকার আনিসুল ইসলামের ছেলে আজিজুল ইসলাম (২৭)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, হারাগাছের হক বাজার এলাকার গণি মার্কেটে জুয়া আসরে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় জুয়ার আসর ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করে কয়েকজন যুবক। পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। পালাতে গিয়ে আজিজুল ইসলাম (২৮) মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। অচেতন অবস্থায় পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারুক আহমেদ জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়ার কারণ সম্পর্কে চিকিৎ​সক কিছু বলতে রাজি হননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, এদিকে রাত নয়টার দিকে তাঁর এই মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছালে বিক্ষুব্ধ জনগণ হারাগাছ পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি চালায়। রাত সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে বিক্ষুব্ধ জনগণ পুলিশ ফাঁড়ি ঘিরে রেখেছেন। রংপুর থেকে সেখানে ব্যাপক পুলিশ পাঠানো হয়।
হারাগাছের নবনির্বাচিত মেয়র হাকিবুর রহমান ‍ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, জুয়া খেলার আসরে পুলিশ অভিযান চালালে পালাতে গিয়ে একজন যুবক মারা যায়। এতে জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ চালায়। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ ফাঁকা গুলি করে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে নিহত ব্যক্তি আজিজুল ইসলামের বাবা আনিসুল ইসলাম জানান, আমি বিষয়টি বুঝে উঠতে পারছি না। আমার ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় এখানকার জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এর বেশি কিছু তিনি জানাতে চাননি।
পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আপাতত সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনগণ পুলিশ ফাঁড়ি আক্রমণ করলে পুলিশ নিজেদের রক্ষা করতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে।’ পুলিশ সুপার বলেন, কি কারণে যুবকের মৃত্যু হয়েছে ময়নাতদন্ত ছাড়া তা বলা সম্ভব নয়।