পদত্যাগ করলেন জাফর ইকবাল ও ইয়াসমীন হক

পদত্যাগপত্র সই করছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তাঁর স্ত্রী ইয়াসমীন হক। ছবি: প্রথম আলো।
পদত্যাগপত্র সই করছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তাঁর স্ত্রী ইয়াসমীন হক। ছবি: প্রথম আলো।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদত্যাগ করেছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তাঁর স্ত্রী ইয়াসমীন হক। আজ দুপুরে তাঁরা দুজন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে পদত্যাগের বিষয়ে জাফর ইকবাল ও ইয়াসমীন হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। জাফর ইকবালের ব্যক্তিগত সহকারী জয়নাল আবেদীন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, জাফর ইকবাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে গুচ্ছ পদ্ধতি প্রবর্তনের প্রস্তাব করেছিলেন। কর্তৃপক্ষেরও এ বিষয়ে সায় ছিল। কিন্তু নতুন এ পদ্ধতির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জাফর ইকবাল ও ইয়াসমীন হক পদত্যাগপত্র জমা দেন।

ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে জাফর ইকবাল ও ইয়াসমীন হক জানিয়েছেন সমন্বিত পরীক্ষাপদ্ধতি নিয়ে কাছের মানুষদের বিরোধিতা তাঁদের ব্যথিত করেছে। বিরোধিতার সূত্রপাত করে বামপন্থী এবং জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান এবং পরে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোও এতে সায় দেয়। একপর্যায়ে অর্থ ও শিক্ষামন্ত্রীও পদ্ধতিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

শিক্ষক দম্পতি লিখেছেন সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য তাঁদের চিঠিতে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁরা জানান, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের স্বকীয়তা পুরোপুরি বজায় রেখে ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে। শুধু এক দিনে এক প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে এবং দেশের অসংখ্য ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের ছোটাছুটি করতে হবে না। তাঁরা লিখেছেন, ‘যাঁরা আমাদের স্বজন, যাঁদেরকে পাশে নিয়ে কাজ করে এসেছি—তাঁরা যদি আমাদের পাশে না থাকেন, তাহলে বুঝতে হবে অবশ্যই এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের বিদায় নেওয়ার সময় হয়েছে।’

পদত্যাগের পর জাফর ইকবাল মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে উপন্যাস লিখবেন। সময়ের অভাবে শিশু-কিশোরদের চিঠির উত্তর নিয়মিত দিতে পারছিলেন না। এখন থেকে চিঠির উত্তর দিতে পারবেন। ইয়াসমীন হক নির্যাতিত নারীদের নিয়ে কাজ করবেন। এই শিক্ষক দম্পতি বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, তাঁরা বলেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁদের একটি পরিপূর্ণ জীবন উপহার দিয়েছে।