পেশাজীবী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে মহাসমাবেশ

দিনাজপুরের বিরামপুরকে জেলা করার দাবিতে গতকাল সোমবার মহাসমাবেশ হয়েছে। এতে ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিরামপুর পেশাজীবী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিরামপুর শহরের ঢাকামোড়েওই সমাবেশ হয়। ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দিনাজপুর-৬ (বিরামপুর-নবাবগঞ্জ-হাকিমপুর-ঘোড়াঘাট) আসনের সাংসদ শিবলী সাদিক। তিনি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের ঘোষণা দেন।

মহাসমাবেশে উপস্থিত হয়ে নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট উপজেলার সরকারদলীয় নেতারা ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা সাংসদের ঘোষণার সঙ্গে ঐকমত্য প্রকাশ করেন। এ উপলক্ষে বিরামপুর উপজেলা শহরে সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও যানবাহন বন্ধ থাকে। শিক্ষার্থীরাসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ সকাল থেকেই সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য সমবেত হতে শুরু করেন। বিরামপুর ছাড়াও হাকিমপুর, নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারাসহ কয়েক শ লোক ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে এতে যোগ দেন।

সমাবেশে শিবলী সাদিক বলেন, ‘সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর জাতীয় সংসদের প্রথম ভাষণেই আমি বিরামপুরকে জেলার দাবি জানাই। আমরা যে ছয়টি উপজেলা নিয়ে জেলার দাবি করছি, তাতে আমার সংসদীয় আসনের চারটি উপজেলা ছাড়াও প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের সংসদীয় আসন দিনাজপুর-৫-এর ফুলবাড়ী ও পার্বতীপুর উপজেলা রয়েছে। তাই মন্ত্রীকে নিয়েই জেলার আন্দোলন এগিয়ে নিতে হবে। মন্ত্রীর সঙ্গে ছয় উপজেলার সব রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে বিরামপুর জেলার দাবি বাস্তবায়ন করা হবে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিরামপুর পৌরসভার মেয়র লিয়াকত আলী সরকার, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কমর সেলিম, হাকিমপুর পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন, সাবেক মেয়র কামাল হোসেন, জেলা যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুশদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সায়েম সবুজ, ঘোড়াঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাফে খন্দকার শাহানশাহ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, দিনাজপুর থেকে ঘোড়াঘাটের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার, হাকিমপুরের ৬৫, নবাবগঞ্জের ৭০, বিরামপুরের ৫৬ ও ফুলবাড়ীর দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। পক্ষান্তরে প্রস্তাবিত বিরামপুর জেলা হতে ঘোড়াঘাট ৪০ কিলোমিটার, হাকিমপুর ১০, নবাবগঞ্জ ১২ ও ফুলবাড়ীর দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার। নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর, ঘোড়াঘাট ও ফুলবাড়ী উপজেলার প্রাণকেন্দ্র বিরামপুর। নবাবগঞ্জ ও ঘোড়াঘাট উপজেলায় রেল যোগাযোগ না থাকায় ওই এলাকার জনগণকে বিরামপুর রেলস্টেশন ব্যবহার করতে হয়। তাই ছয় উপজেলার কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় অচিরেই বিরামপুর জেলা বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন।

বিরামপুর পেশাজীবী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, ১৯৭৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর সরকার বিরামপুরকে মহকুমা করার লক্ষ্যে গেজেট প্রকাশ করে। এর ফলে তৎকালীন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত একটি দল ১৯৮০ সালের ১৬ জানুয়ারি ফুলবাড়ী ও ২৩ জানুয়ারি বিরামপুর কলেজ মাঠে পৃথকভাবে জনমত যাচাই করলে বিরামপুরে মহকুমা করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে এসব কার্যক্রম থেমে গেলে বিরামপুরবাসী জেলার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।