এবারও ভোট দেবেন না রূপসার নারীরা!

ভোট দেওয়া প্রত্যেক পূর্ণবয়স্ক মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রূপসা ইউনিয়নের নারীরা পাঁচ দশক ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন না।
কথিত আছে, প্রায় ৫০ বছর আগে ওই এলাকায় কলেরা প্রকোপ দেখা দেয়। এরপর একজন পীর ওই ইউনিয়নের নারীদের ভোট দিতে নিষেধ করেন। সেই থেকে এই ইউনিয়নের কোনো নারী আর ভোট দেন না। এমনকি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে যাঁরা নির্বাচনে লড়বেন, তাঁরাও নিজের ভোটটি দেবেন না। তবে এই কথা প্রকাশ করলে ভোটে প্রভাব পড়তে পারে, এ জন্য প্রার্থীদের কেউ এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ গ্রামের গৃহবধূ ইতি বেগম ঢাকার মেয়ে। তাঁর বিয়ে হয়েছে পাঁচ বছর। তিনি এসেই শুনেছেন এখানে নারীরা ভোট দেন না। সেই থেকে তিনিও ভোট দেন না। এমনকি এবারের ইউপি নির্বাচনে কারা প্রার্থী তা-ও তিনি জানেন না।
একই গ্রামের এখতেয়ার হোসেন বলেন, ‘পীর কইছে এ জন্য মহিলারা ভোট দেয় না। আমরা হ্যাতোগোরে যাওতেও কই না। এইডা চলি আইতেছে।’
কথা হয় স্থানীয় গ্রিদো কালিন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রোজিনা আখতারের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই ইউনিয়নের পুরুষেরা এগিয়ে এলে নারীরা ভোট দিতে পারতেন। আর কিছুরই দরকার নেই।
যোগাযোগ করলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, এটা তাঁদের বিশ্বাসের বিষয়। তাঁদের বিশ্বাস যেন ফেরানো যায়, এ জন্য ওই ইউনিয়নের মসজিদগুলোর ইমামদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে ভোট হচ্ছে আজ। সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে বড় কোনো সহিংসতা ঘটেনি। ১৪ ইউনিয়নের ১২টিতেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। আর বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে সাতটিতে।