রওশনকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করায় নিন্দা

ডা. শামসুল আলম মিলনের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পরিবারের সদস্যরা ষ প্রথম আলো
ডা. শামসুল আলম মিলনের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পরিবারের সদস্যরা ষ প্রথম আলো

শহীদ মিলন দিবসের আলোচনা সভায় স্বৈরশাসক এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ার সমালোচনা করেছেন রাজনীতিবিদ ও চিকিৎসক নেতারা। তাঁরা সরকারকে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের মিলন চত্বরে চিকিৎসক নেতা শামসুল আলম মিলনের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এই সভার আয়োজন করে। বিএমএর সভাপতি অধ্যাপক মাহমুদ হাসান এতে সভাপাতিত্ব করেন। বিগত বছরগুলোতে মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নিমন্ত্রণ জানানো প্রায় রেওয়াজে পরিণত হয়েছিল। এবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
তবে শহীদ মিলনের প্রসঙ্গের চেয়ে এ সভায় মহাজোট সরকারের গুণগান বেশি প্রাধান্য পায়। একাধিক আলোচক বলেন, মিলন যে ধরনের স্বপ্ন দেখেছিলেন মহাজোট সরকার তা বাস্তবায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সভায় নির্বাচনকালীন সরকারের দুইজন মন্ত্রী মহাজোট আবার নির্বাচিত হলে জনগণের কী সুবিধা হবে তার বর্ণনা দেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বিএনপির উদ্দেশে বলেন, ‘নির্বাচনে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনকে প্রতিহত করবেন না। জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না।’
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিএনপি এতে না এলেও একতরফা নির্বাচন হবে না। এটি হবে বহুদলীয় নির্বাচন। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচন বর্জনের ট্রেন ক্রমাগত পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দিকে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘যাঁকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী (রওশন এরশাদ) বানানো হয়েছে, তা মিলনের জন্য অবমাননাকর। শেষ মুহূর্তে এসে এভাবে আঘাত করার বিষয়টি আমি ব্যক্তিগতভাবে মেনে নিতে পারি না।’ তিনি বলেন, মিলনের ওপর যারা গুলি চালায় ও গুলি চালানোর হুকুমের আসামি স্বৈরশাসক এরশাদের বিচার হওয়া উচিত।
নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মোশতাক হোসেন। এই চিকিৎসক নেতা বলেন, যে স্বৈরাচার সরকার মিলনকে হত্যা করেছে তাদের প্রতিনিধিকে ঘাড়ের ওপর বসিয়ে দিলেই তা মেনে নেওয়া হবে না। সরকারকে সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে।
বিএমএর নেতা এবং অন্য চিকিৎসক নেতারা মিলনের দর্শন, আত্মত্যাগ, তাঁর ভেতরের শক্তিকে ধারণ করার আহ্বান জানান।
বিএমএর মহাসচিব এম ইকবাল আর্সলান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নূরুর রহমান সেলিম সভায় বক্তব্য দেন।