ছাড়পত্র দেওয়ার সাত মাস পর নির্মাণকাজ বন্ধের আদেশ

প্লট বিভাজন ও নকশা অনুমোদন এবং ভবন নির্মাণের ছাড়পত্র দেওয়ার সাত মাসের মাথায় নির্মাণকাজ বন্ধের আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। ওয়ারিশ সূত্রে মূল প্লটের একাংশের মালিকের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে দেওয়া এ আদেশের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে পাঁচ মাসেও প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগী ব্যক্তি। ওই প্লটে ভবন নির্মাণের প্রাথমিক প্রস্তুতিতে তাঁর ১৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে বলে তিনি জানান।
নগরের হালিশহর হাউসিং এস্টেটের ‘এল’ ব্লকের ১ নম্বর সড়কের ২ নম্বর লেনের পাঁচ কাঠা আয়তনের একটি প্লটের (প্লট নম্বর ৬) ১ দশমিক ৪৫ কাঠা অংশের হেবা ও ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হামিদুল হক। গত বছর ১৬ জানুয়ারি প্লটটি বিভাজনের জন্য তিনি জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। আনুষঙ্গিক আইনি প্রক্রিয়া শেষে নির্বাহী প্রকৌশলী গত বছর ২৮ মে ৬/এ প্লট সৃষ্টি ও নকশা অনুমোদনের সুপারিশ করেন। ৫ নভেম্বর ওই প্লটে ৬/এ নামে আলাদা প্লট সৃষ্টি করে এর নকশা অনুমোদন দেওয়া হয় এবং ২৪ ডিসেম্বর তাতে আবাসিক ভবনের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এ বছর ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওই নকশা অনুমোদনকে স্থানীয় একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।
হামিদুলের অভিযোগ, সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত ২২ জুন তাঁর নামে বরাদ্দ প্লটে ভবন নির্মাণকাজ করতে গেলে তিনি এবং তাঁর লোকজনকে বাধা দেন মূল প্লটের অংশীদার প্রতিবেশী হাজেরা বেগম। এ সময় নির্মাণকাজ না করার জন্য হুমকি দেন তিনি। এ ব্যাপারে হামিদুল ২৩ জুন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
অন্যদিকে, ঘটনার চার দিন পর দিলওয়ারা হোছাইন রুবিনাসহ হাজেরা বেগম নতুন সৃষ্ট ও অনুমোদিত প্লটটির অনুমোদন ও নকশা বাতিলের জন্য জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান। তাঁদের অভিযোগ, প্লটটি বিভাজনের ব্যাপারে তাঁদের নোটিশ দেওয়া হয়নি এবং বিভাজন সঠিক হয়নি। তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ জুলাই ওই প্লটে নির্মাণকাজ বন্ধের আদেশ দেন গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী।
এ বিষয়ে হামিদুল হক জানান, সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে প্লট পরিদর্শন, কাগজপত্র পরীক্ষা ও সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ প্লট বিভাজন অনুমোদন দেয়। যে প্রকৌশলী ৬/এ প্লট সৃষ্টি ও নকশা অনুমোদনের সুপারিশ করেন এবং ২৪ ডিসেম্বর তাতে আবাসিক ভবনের ছাড়পত্র দিয়েছেন, তিনিই সাত মাস পর নির্মাণকাজ বন্ধের নোটিশ দিলেন, এটা রহস্যজনক।
তিনি বলেন, ‘নির্বাহী প্রকৌশলীর নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে কাগজপত্র নিয়ে একাধিকবার তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে বক্তব্য দিলেও কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৭ অক্টোবর দেখা করলে নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, এ বিষয়ে তাঁর কিছু করার নেই।’ নির্বাহী প্রকৌশলী এ কিউ এম শাহজালাল মজুমদার বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে, কাগজপত্র দেখে, অভিযোগটি সামগ্রিকভাবে তদন্ত করে ঢাকায় প্রতিবেদন পাঠাব। সেখানেই বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে।’ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন পাটওয়ারী বলেন, ‘কাগজপত্র যা দেবার, আমরা দিয়েছি। ওই কাগজপত্র দেখিয়ে এখন ওরা যেখানে যেভাবে পারে, সমস্যা সমাধান করুক।’