খননের বছর না ঘুরতেই টাঙ্গনে আবার হালচাষ

শুষ্ক মৌসুমে পানিপ্রবাহ ধরে রাখতে ঠাকুরগাঁও শহরের টাঙ্গন নদের খননকাজ চলতি বছরের জানুয়ারিতে শেষ হয়। কিন্তু ঠিকাদার যেনতেনভাবে কাজ শেষ করায় বছর না ঘুরতেই আবার নদে বালু জমেছে। নদের বুকে আবার চাষাবাদ শুরু করেছে স্থানীয় লোকজন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে জানা যায়, শুষ্ক মৌসুমে পানিপ্রবাহ ঠিক রাখতে সরকার দেশের মরা নদ-নদীগুলোর জন্য খনন প্রকল্প হাতে নেয়। এরই অংশ হিসেবে পাউবো ‘ঠাকুরগাঁও শহর রক্ষা প্রকল্প’ নামে সদর উপজেলার টাঙ্গন ব্যারাজ থেকে মাতৃগাঁও পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার নদ খননের প্রস্তাব দেয়। এরপর সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটি প্রথম পর্যায়ে এক হাজার ১৫০ মিটার খননের সুপারিশ করে। ব্যয় ধরা হয় ৮০ লাখ টাকা।
ঠাকুরগাঁওয়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঐশী এন্টারপ্রাইজ এই কাজ পায়। ২০১২ সালের ১৯ এপ্রিল খননকাজের উদ্বোধন করা হয়। দরপত্রে নদের তলদেশে ১০ মিটার প্রস্থ, ওপরে ২৫ মিটার প্রস্থ ও তিন মিটার গভীর করে কাটার কথা। গত জানুয়ারিতে কাজ শেষ হয়।
এদিকে খননকাজ শেষ হওয়ার আগে গত ডিসেম্বরে খননশ্রমিক দলের নেতা শহিদুল ইসলাম জানান, ঠিকাদারের নির্দেশ অনুযায়ী তলদেশে সাত থেকে আট এবং ওপরে ১২ থেকে ১৫ মিটার প্রস্থ এবং এক মিটার গভীর করে নদ খনন করা হয়েছে।
২৪ নভেম্বর সরেজমিনে দেখা যায়, জলেশ্বরীতলা মহল্লায় সেতুর নিচে নদের বুকে হালচাষ করছেন মঞ্জুরুল হক নামের এক ব্যক্তি। পাশেই জমি তৈরি করছেন মোহাম্মদ আলম নামের আরেকজন।
মঞ্জুরুল জানান, গত বছর নদ খননের জন্য তিনি আবাদ করতে পারেননি। এ বছর আবার চর জাগায় সেখানে গম চাষের জন্য জমি তৈরি করছেন।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার সাবেক মেয়র আকবর হোসেন বলেন, নদ খননের জন্য কাজ হয়নি। বিলের টাকা আত্মসাতের জন্য ওই খনন হয়েছিল। তাই বছর না ঘুরতেই যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। ঠাকুরগাঁও পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী নৈমুল হক বলেন, ‘গত বর্ষায় বালু ও পলি এসে নদে পড়েছে। এতে হয়তো নদ কিছুটা ভরাট হয়ে থাকতে পারে। স্থানীয় ব্যক্তিরা সেখানে চাষাবাদ করছে কি না, আমার জানা নেই।’