পাঁচ বিএনপি নেতার মুক্তি দাবি জার্মানির

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদসহ দলের পাঁচ জ্যেষ্ঠ নেতার মুক্তি দাবি করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত আলব্রেখট কনজে। আজ বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে তাঁর দপ্তরে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।

জার্মান রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেছেন, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিবের ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বড় ধরনের অগ্রগতি হবে।

আলব্রেখট কনজে বলেন, ‘বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের মুক্তির জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছি। কারণ তাঁরা বেশ কিছুদিন ধরে কারাবন্দী আছেন।’

জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বিএনপির আটক নেতাদের অনেকেই আমার বন্ধু এবং তাঁদের আমি ভালোভাবেই চিনি। তাঁদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তাঁদের পক্ষে সেসব করা সম্ভব নয়।’

প্রসঙ্গত, ৮ নভেম্বর রাতে বিএনপির নেতা মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু ও বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর হরতালে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের বিরুদ্ধে হামলার মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

জার্মান রাষ্ট্রদূত যখন পাঁচ বিএনপি নেতার মুক্তি দাবি করেন তার কিছুক্ষণ আগে ঢাকার দায়রা জজ আদালত তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করেন।

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরেন জার্মান রাষ্ট্রদূত।

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে আলব্রেখট কনজে বলেন, ‘বাংলাদেশের বিশেষ এ সময়টাতে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়ন দুই দলের কাছে সমান দূরত্বে অবস্থান করে পুরোপুরি নিরপেক্ষ ভূমিকায় থাকতে চায়, সেটিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছি।’ তাঁর মতে, বাংলাদেশের মতো দেশে নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি যখন সংক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে, তখন এ ধরনের সংবেদনশীল পরিস্থিতিতে বিদেশি দেশগুলোর এ ধরনের ভূমিকায় থাকা উচিত।

সমঝোতার ওপর গুরুত্বারোপ করে জার্মান রাষ্ট্রদূত জানান, দুই দল যাতে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার পরিবেশ সৃষ্টি করে সেজন্য ইউরোপের রাষ্ট্রদূতেরা দুই দলের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন।

আলব্রেখট কনজে বলেন, ‘আমি মনে করি, দুই পক্ষের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া উচিত এবং তাঁরা রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমন করবেন। আর শেষ মুহূর্তে তাঁরা সমঝোতার উপায় খুঁজে বের করবেন, যার মাধ্যমে নির্বাচনে প্রত্যেক দলের অংশ নেওয়ার পথ সুগম করবে।’

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের নামে সহিংসতার বিরোধিতা করে আলব্রেখট কনজে বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার নামে সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

তারানকোর সফরে বড় অগ্রগতি হবে

জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর আসন্ন সফর নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আলব্রেখট কনজে। তিনি বলেন, ‘তারানকোর আসন্ন সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সফরটি শেষ মুহূর্তে হলেও, তা সঠিক সময়েই হচ্ছে। কাজেই আমাদের সবার প্রত্যাশা, তাঁর সফরের আগেই দুই পক্ষ দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নেবে। এ সফরের সময় বড় ধরনের অগ্রগতি হবে এবং এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জার্মান সরকার অব্যাহতভাবে কাজ করবে। আমি বিশ্বাস করি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ জন্য কাজ করে যাবে।’