আ.লীগ-বিদ্রোহীর লড়াই ভোটাররা শঙ্কিত

যশোরের ঝিকরগাছায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আর দলটির বিদ্রোহী প্রার্থীদের ভোটের লড়াইয়ে ভোট দেওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন ভোটাররা। নির্বাচনের এক দিন আগে পেশিশক্তির মহড়া দেওয়ার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছে দুপক্ষই।
আজ শনিবার উপজেলার ১১টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে সাতটিতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সমর্থকেরা ও চারটিতে যশোর ২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনের সাংসদ মনিরুল ইসলামের সমর্থকেরা দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। আটটি ইউপিতে আওয়ামী লীগের ১৫ জন বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে আছেন। এর মধ্যে ছয়টিতে সাংসদ ও দুটিতে শাহীন চাকলাদারের সমর্থকেরা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ে আছেন। মূলত তাঁরাই মাঠের লড়াই জমিয়ে রেখেছেন।
গত সপ্তাহে পাঁচ বিদ্রোহী প্রার্থীসহ দলের নয়জন নেতাকে বহিষ্কার করেও বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি সরকারি দল। জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, সাংসদ-সমর্থিত বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থক নেতাদের বহিষ্কার করা হলেও শাহীন চাকলাদার-সমর্থিত বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কার করা হয়নি। এ নিয়ে দলের নেতাদের মধ্যেও ক্ষোভ আছে।
পানিসারা ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী নওশের আলী গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিযোগ করেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। আর বিদ্রোহী মীর বাবর জান অভিযোগ করেন, তাঁর সমর্থকদের রাস্তাঘাটেই বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনটি মামলা করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
একই ধরনের অভিযোগ করেন শংকরপুরের আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোবিন্দ চন্দ্র চ্যাটার্জি ও বিদ্রোহী প্রার্থী শরিফুল ইসলাম। অন্য পাঁচটি ইউপিতে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীরাও পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন ভোটার বলেন, নৌকা ও নৌকার বিদ্রোহী সবাই ক্ষমতাসীন দলের লোক। কেউ সাংসদের, আর কেউ শাহীন চাকলাদারের লোক। তাঁদের প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে ভোটের মাঠের বারোটা বেজে যাচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রমজান শরীফ বাদশা প্রথম আলোকে বলেন, ‘যোগ্য প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক পাওয়ায় এত বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড়িয়ে গেছেন। গত সংসদ নির্বাচনে যাঁরা নৌকার বিরোধিতা করেছিলেন, তাঁরাই এবার নৌকা প্রতীক পাওয়ায় আমরা ক্ষুব্ধ।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এত বিদ্রোহী থাকাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘আমি চাই না নির্বাচনকে ঘিরে হানাহানি হোক। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা দলের পক্ষ থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাব।’
এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ প্রসঙ্গে ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা খবির আহমেদ বলেন, ‘আমাদের যে দায়িত্ব, সেটা আমরা ঠিক রাখার চেষ্টা করছি। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে আমরা দেব না।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে।’