তিন বছর ধরে কমছে পাসের হার, জিপিএ-৫

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় টানা তিন বছর ধরে পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমছে। এবারও পাসের হার ও জিপিএ-৫ এ মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা এগিয়ে। এবার শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা গতবারের চেয়ে কমেছে। শূন্য ভাগ পাস করা বিদ্যালয়ের সংখ্যা তিনটি। গতকাল বুধবার দুপুরে এসএসসি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফল বিবরণী থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ বলেন, পরীক্ষা ব্যবস্থাপনায় কড়াকড়ি আরোপ ও বাংলায় প্রত্যাশিত ফল না করার কারণে জিপিএ-৫ ও পাসের হার কমেছে। আরও কী কী কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ বছর কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধিভুক্ত ছয় জেলার ১ হাজার ৬৭১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১ লাখ ৬১ হাজার ৯৬ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৮৩৩ জন। এর মধ্যে ছেলে ৬২ হাজার ৭৭৭, মেয়ে ৭২ হাজার ৫৬ জন। পাসের হার ৮৪। ছেলেদের পাসের হার ৮৫ দশমিক ২৩, মেয়েদের পাসের হার ৮২ দশমিক ৯৫। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ৯৫৪ জন। এর মধ্যে ছেলে ৩ হাজার ৬৭২, মেয়ে ৩ হাজার ২৮২ জন।
প্রকাশিত ফল নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কুমিল্লার নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকসানা ফেরদৌস মজুমদার। তিনি বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলের মেয়েদের মুখস্থবিদ্যা পরিহার করে সৃজনশীল পদ্ধতির প্রশ্নের ধরন ও উত্তর সম্পর্কে আরও বেশি জানতে হবে। তবেই পাসের হার ও জিপিএ-৫ বাড়বে।’
কুমিল্লা বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ২০১৩ সালে কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৪১ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৭ হাজার ৮৫৫ জন। ২০১৪ সালে হঠাৎ করে পাসের হার কমে যায়। ওই বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল শতকরা ৮৯ দশমিক ৯২ ও জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১০ হাজার ৯৪৫ জন। ২০১৫ সালে পাসের হার ৮৪ দশমিক ২২ ও জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১০ হাজার ১৯৫। এ বছর পাসের হার ৮৪ ও জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ৯৫৪ জন। গত তিন বছরে বোর্ডে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বিদ্যালয়ের সংখ্যা ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু ক্রমাগতভাবে পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে।
কেউ পাস করেনি: কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের তিন বিদ্যালয় থেকে এবার কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। ওই বিদ্যালয়গুলোতে পাসের হার শূন্য ভাগ। বিদ্যালয় তিনটি হলো কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হাজি রুস্তম আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, গোত্রশাল উচ্চবিদ্যালয় ও নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলার উত্তর রামেশ্বর উচ্চবিদ্যালয়। এর মধ্যে যথাক্রমে হাজি রুস্তম আলীতে ১৭, গোত্রশালে ১৪ ও উত্তর রামেশ্বরে ১৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ বলেন, ‘বিদ্যালয় তিনটিকে শোকজ করা হবে। একই সঙ্গে তাদের ফল খারাপ হওয়ার কারণ উদ্ঘাটনের চেষ্টা করা হবে। অনেক বছর পর এ বোর্ডে তিনটি বিদ্যালয়ের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করেনি।’