ভোট পেতে হিন্দুদের ভীতি প্রদর্শন

নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ভোট আদায়ের জন্য তাঁদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত রোববার অন্তত ৫০ জন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সালামাবাদ ইউপির দেবীপুর, হামিদপুর ইউপির বিষ্ণুপুর, বড়নাল-ইলিয়াসাবাদ ইউপির বড়নাল গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন।
দেবীপুর গ্রামের কয়েকজন ভোটার বলেন, এ ইউপি থেকে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের শামীম আহম্মেদ লড়াই করছেন। স্বতন্ত্র হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান নাজমুল হক প্রিন্স প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দেবীপুর গ্রামের প্রায় ২০০ হিন্দু পরিবার নৌকায় ভোট না দিলে তাঁদের প্রাণনাশ করার হুমকি দিচ্ছেন নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা। এ ঘটনায় কালিয়া থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা নিখিল দাস বলেন, ‘আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কাজ করায় ১১ মে রাত দুইটার দিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম আহম্মেদের সমর্থকেরা আমার বাড়িতে এসে গালাগাল করাসহ জীবননাশের হুমকি দেন। নৌকায় ভোট না দিলে আমাদের গ্রামছাড়া করা হবে। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।’ একই গ্রামের গণপতি দাস, রিপন দাসকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে তাঁরা ১২ মে কালিয়া থানায় জিডি করেছেন।
সালামাবাদ ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নাজমুল হক বলেন, ‘১১ মে বেলা ১১টার পর আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য মুঠোফোনে হুমকি দেওয়া হয়। অন্যথায় আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। আমি থানায় জিডি করেছি।’
সালামাবাদ ইউপির আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শামীম আহম্মেদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এগুলো সব মিথ্যা কথা। নির্বাচনে আমার অবস্থা ভালো দেখে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থীরা ভরাডুবির আশঙ্কায় নির্বাচন বানচাল করতে গুজব রটাচ্ছেন।’
বড়নাল গ্রামের রণজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘অনেক রাতে বাড়িতে এসে ১০ থেকে ১২ জন আমাকে গালিগালাজ করে বলে, নৌকায় ভোট দিবি, নইলে জবাই করে ফেলব।’ বিষ্ণুপুর গ্রামের নমিতা বালা, হরেকৃষ্ণ বিশ্বাসসহ কয়েকজন বলেন, নৌকার প্রার্থী ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনেকেই তাঁদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হবে।
কালিয়ার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো উল্লেখ করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ গণি মিয়া বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হককে হুমকি দেওয়ার ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে—এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জিডি হয়েছে। তদন্ত চলছে।