হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও এসপির অপসারণ দাবি

পঞ্চম ধাপের নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতায় জামালপুরে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নে সর্বস্তরের মানুষের মানববন্ধন l ছবি: প্রথম আলো
পঞ্চম ধাপের নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতায় জামালপুরে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নে সর্বস্তরের মানুষের মানববন্ধন l ছবি: প্রথম আলো

পঞ্চম ধাপের নির্বাচনী সহিংসতায় চারজন নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে জামালপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচিতে নিহত ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজনসহ প্রায় পাঁচ হাজার নারী-পুরুষ অংশ নেন। তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে জামালপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. নিজাম উদ্দিনকে অপসারণের দাবি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বাহাদুরাবাদ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে গতকাল দুপুরে মানববন্ধন শুরু হয়। একপর্যায়ে তা বিক্ষোভে রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীরা বেলা ১১টার দিকে মিছিল সহকারে গিয়ে দেওয়ানগঞ্জ-তারাটিয়া সড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা একটার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কেন্দ্র দখল ও নৌকা প্রতীকে সিল মারতে বাধা দেওয়ার কারণেই স্কুলছাত্রসহ চারজনকে হত্যা করা হলো। হত্যাকারীরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থক হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ধরছে না। উল্টো নিহত ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজনসহ প্রায় ৫০০ জন নিরীহ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তারা গ্রেপ্তার-আতঙ্কে রাতে বাড়িতে থাকতে পারছে না।
মানববন্ধনে নিহত জিয়াউর রহমানের মা জয়লা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের অপরাধ শুধু নৌকা প্রতীকে সিল মারতে বাধা দেওয়া। এ কারণে কেন্দ্রের মধ্যেই মাথায় গুলি করে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এরপরও পুলিশ অপরাধীদের ধরছে না। টাকার কাছে সবাই বিক্রি হয়ে গেছে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে বক্তারা বলেন, জামালপুরের এসপিকে অপসারণ করতে হবে। তা নাহলে প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যাবে।
জানতে চাইলে এসপি মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, গ্রামবাসী সংক্ষুব্ধ হয়ে থাকলে অপসারণের দাবি করতেই পারে।
২৮ মে বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের কুঠারচর ইবতেদায়ি মাদ্রাসা কেন্দ্র দখল করে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. শাকিরুজ্জামান রাখালের সমর্থকেরা সিল মারা শুরু করেন বলে অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী মো. শাজাহান মিয়ার সমর্থকেরা তির-বল্লম নিয়ে ছুটে যান সেখানে। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। তাঁরা সবাই বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক।